পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৪৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী
৪১৯

পুস্তকাকারে প্রকাশিত হয়। ইহার ‘‘শান্তি” এবং “শিবানী” নিজ নিজ অংশাভিনয়ে যে কৃতকার্য্য হতে পেরেছিল, সে-যুগের সাহিত্যসমালোচনায় তার বহুতর প্রমাণ পাওয়া যায়। “সিদ্ধেশ্বরী” ঐ চরিত্রের নারীদের একটি সাহিত্যিক জ্বলন্ত উদাহরণ, যা’ বাংলার পল্লীতে বিরাজমানা থেকে সংসার ও সংসারীকে আজও অতিষ্ঠ করে তুলছে।

 “বাগদত্তা” উপন্যাসের কমলা, গৌরী, বড়বৌ, বিন্ধ্যবাসিনী আমাদেরই ঘরকন্নার একেবারে ভিতরকার লোক। জানা ও চেনা। তবে ‘কমলা’র জীবনের বিয়োগান্ত ব্যাপারের মধ্যকার গভীর সমস্যাটাই শেষ পর্যন্ত পাঠককে চিন্তিত রাখে যা হোক একটা সমাধানের প্রত্যাশায়; যেহেতু সেটা ইহলোকের চেয়ে পরলোকেরই মুখাপেক্ষী।

 “জ্যোতিহারা”র অণিমা ঠিক যেন আমাদের ঘরোয়া মেয়ে নয়! তাই পাঠকের সহানুভূতি স্নিগ্ধ শান্ত আত্ম বিসর্জনকারিণী শারদজ্যোৎস্নার মত “জ্যোৎস্না’’র প্রতিই বেশী আকৃষ্ট হয়েছে। নাস্তিকতা নিশ্চয়ই আমরা পছন্দ করি না, তা’য় আবার কোন মেয়ের মধ্যে দিয়ে! তবে জগতে যত মত, তত পথ। ‘‘সুপ্রভাত’’ মাসিক পত্রিকায় উপন্যাসটী প্রকাশকালে এই চরিত্রটী সার জগদীশচন্দ্র বসু মহাশয়ের বড় ভাল লেগেছিল, সে কথা তিনি লেখিকাকে নিজে বলেছিলেন। কোন অসাধারণ দার্শনিক পণ্ডিত প্রবরেরও[১] ঐ শান্তিহীনা মেয়েটীর প্রতি উপন্যাস বর্ণিত “দাদা মশাই’’য়ের মত কৃপাদৃষ্টি পড়েছিল বলে জানা আছে।


  1. যিনি ঐ উপন্যাসে চিত্রিত ‘‘দাদা মহাশয়ের’’ সত্যরূপ।