পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৪৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২৬
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

 অমলা দেবীর (কল্পিত নাম কি না জানি না) প্রত্যেক নর এবং প্রত্যেক নারী বর্তমানের জীবন্ত লোক,—যাদের নিয়ে আমরা ঘর করছি, অথচ অতি পরিচয়ের জন্য যাদের কথা লিখতে মনেই পড়ে না। নরনারীর যুগপৎ চরিত্রগুলি যেন শুধু চোখে নয়, মাইক্রোস্কোপের সামনে বীজাণুর মত বৃহত্তর হয়ে ওঠে!

 অপরাজিতা দেবীর অসমাপ্ত উপন্যাস “বঙ্গরমণী”র এবং “বিজয়ী’’র জন্য আমরা প্রত্যাশিত হয়ে পথ চেয়েছিলাম, কিন্তু আজও আমাদের সে প্রতীক্ষা পূর্ণ হয়নি। এ দুটী উপন্যাসের বধূরা ‘রুক্মিণী’, ‘সুদেষ্ণা’, ‘কৈকেয়ী চৌধুরাণী’দের চরিত্রগুলি অতি নিপুণ হস্তেই অঙ্কিত হয়েছে। আবার সুদূর বঙ্গপল্লীর মর্মরূপও চাপা নেই। “বুকের বীণা”, “আঙ্গিনার ফুল” ইত্যাদির লেখিকা অপরাজিতা দেবীর বিংশ মধ্যযুগীয় অত্যাধুনিক এবং নারীর স্বভাবজ সলজ্জভাব বহির্ভূত প্রগল্‌ভ ভাবের নারী-চরিত্র অর্থাৎ নারীর ‘‘আত্ম-প্রচার” অনেকেই পুরুষ রচিত বলে সন্দেহ করে থাকেন! রচনায় শক্তির প্রাচুর্য্য ও নূতনত্ব যথেষ্ট থাকলেও ভাষা ও ভাবের সংযম একেবারেই নেই। নারী চিত্তের গোপন রহস্য একান্তই উন্মুক্ত হয়ে গেছে। সেটা আধোমুক্ত থাকলেই মনে হয় পাঠকদের আগ্রহ উদ্রিক্ত করে।

 পুষ্পলতা দেবীর নীলিমার অশ্রুতে নীলিমা ও অশ্রু দু’টি চরিত্রই ভাল হয়েছে। “ইন্দিরা” আধুনিক ধরণের মেয়ে, ভাল মন্দর সংমিশ্রণে “ব্রজরাণী”, “সুরমা”দেরই ছাঁচে গড়া। তা’ একটা কথাই তো আছে;—