পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি
২৫

দিয়ে কি ভাবে নূতন জীবন পেয়েছিলেন, তা তাঁদের নিজেদের ভাষাতেই আমরা পাই। বিমলা ব'লছেন, “আমি আমার যৌবন, বর্ণ, রূপ, ভাগ্য ও খ্যাতির অহঙ্কারে মত্ত ছিলুম, লোকের মন ভোলাবার জন্য নানাভূষণে লেপনে দেহ সাজিয়ে ব্যাধের মতো জাল পেতে ব'সে থাকতুম। মানুষের ধর্ম ও ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে দেবার জন্য নানা রকম ছলনা ক'রে আঁচল ওড়াতুম। আজ আমার মাথা মোড়ানো, পরণে ছেঁড়া কাপড়, ভিক্ষা ক'রে উদরান্ন সংগ্রহ করি, গাছতলায় ধ্যান করে আমার জীবন কাটে। আমার সব বন্ধন কেটে গেছে, সব পাপ নষ্ট হয়েছে, নির্বাণের সুখ আমার চিত্ত অধিকার করেছে।” থেরী অম্বপালীর অলৌকিক সৌন্দর্য এককালে জনপ্রবাদে পরিণত হয়েছিল। বৈশালীর এই সুন্দরীর মোহে মগধেশ্বর বিম্বিসারকেও এক দিন পড়তে হয়েছিল। বৈশালীতে তাঁর আম্রবনে বুদ্ধদেব বিশ্রাম করছেন শুনে অম্বপালী তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এলেন। তাঁর সামান্য বেশ-ভূষা অথচ সুন্দর মোহন মূর্তি! স্বয়ং বুদ্ধও তাকে দেখে চমকে গেছলেন, মনে মনে ভেবেছিলেন, “স্ত্রীলোকটি কি অপূর্ব সুন্দরী! রাজপুরুষেরাও এর রূপলাবণ্যে মোহিত এবং বশীভূত, অথচ এ কেমন সুধীর শান্ত। সচরাচর স্ত্রীলোকের মতো যৌবনমদমত্ত চপলস্বভাব নয়। জগতে এমন নারীরত্ন দুর্লভ।” অম্বপালীর চিত্তক্ষেত্র প্রস্তুত ছিল, পাপে বিতৃষ্ণা এসেছিল, বুদ্ধের ধর্মোপদেশে তাঁর মন গলে গেল। সশিষ্য বুদ্ধকে নিমন্ত্রণ ক'রে পরিতোষ ক'রে খাইয়ে তাঁর প্রাসাদতুল্য উদ্যানভবন বুদ্ধ এবং সঙ্ঘকে দান ক'রলেন। পাপলব্ধ বিপুল ঐশ্বর্য সঙ্ঘের সেবায় ব্যয় ক'রে তপোবলে

O.P. 92-4