পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

হিসাবে আমরা তাকে শুধু বোঝবার চেষ্টা করব। খৃষ্টপূর্ব উনসত্তর অব্দে মিশরের টলেমি নামক গ্রীকরাজবংশে এই কন্যার জন্ম হয়। সেদিনের সব চেয়ে বড় অধ্যাপকরা তাকে শৈশব থেকে পড়িয়েছেন, সব চেয়ে বড় শিল্পীরা ছবি আঁকতে নাচতে গাইতে শিখিয়েছেন। কিন্তু শেখালেই সকলে সব কিছু শিখতে পারে না, গ্রহণ করবার শক্তি চাই। ক্লিওপেট্রার সেই অসামান্য গ্রহণশক্তি ছিল, আর ছিল লোকোত্তর প্রতিভা। চৌদ্দবছর বয়সে তার পাণ্ডিত্যখ্যাতি তার রূপের খ্যাতির সঙ্গে সঙ্গে দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে, তার মধ্যেই তিনি আটটা ভাষায় অবলীলাক্রমে কথা বলতে পারতেন, রাজনীতির কূটতর্ক, দর্শনের গভীরতত্ত্ব, শিল্পকলার নিগূঢ় রহস্য নিয়ে অনায়াসে আলোচনা করতে পারতেন। সতেরো বছর বয়সে তাঁর পিতার মৃত্যুর পর তিনি ছোট ভাই টলেমির সঙ্গে একত্রে রাজসিংহাসনের উত্তরাধিকারিণী হলেন। দু’জনে এক সিংহাসনে বসলেও স্বাধীন ভাবে রাজকার্য দেখতেন ক্লিওপেট্রাই। ক্রমে টলেমি বড় হয়ে ক্লিওপেট্রার রাজশক্তি কেড়ে নিলে, তিনি সিরিয়ায় গিয়ে সৈন্যসংগ্রহে নিযুক্ত হলেন। এই সময়ে পরাজিত পলায়মান ‘পম্পি’কে অনুসরণ রোমের দিগ্বিজয়ী সেনাপতি জুলিয়াস সিজার মিশরে আসেন। এখানে অসামান্য রূপবতী ও কূটনীতিজ্ঞা সুশিক্ষিত ক্লিওপেট্রার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়, পরিশেষে ক্লিওপেট্রা পরামর্শদাত্রীরূপে বিরাট সাম্রাজ্য শাসনে তাকে সাহায্য করতে থাকেন, সিজারের হত্যার পর তিনি স্বরাজ্যে ফিরে আসেন। অতঃপর নানারূপ অনাচার অনুষ্ঠানের পরিণামে ইচ্ছাকৃত সর্পদংশনে নিজেই নিজ পাপের