পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প, সাহিত্য সব কিছু নির্মমভাবে ধ্বংস করতে আরম্ভ করেছে। আলেকজান্দ্রিয়ার সেই পতনের যুগে মিশরের প্রাচীন ধর্মের সেই চরম দুর্দিনে স্বজাতির প্রাচীন সভ্যতাকে এবং অধর্মের কল্যাণ-বাণীকে রক্ষার জন্য প্রবল শত্রুর আক্রমণের বিরুদ্ধে অকুতোভয়ে দাড়িয়েছিলেন হাইপেসিয়া। এই মহীয়সী নারী বক্তৃতার পর বক্তৃতায় মিশরবাসীকে স্মরণ করিয়ে দিতে লাগলেন তাদের অতীত গৌরব, তাদের ধর্মের নিগূঢ় আধ্যাত্মিক তত্ত্ব। বোঝালেন সবাই যাকে ছেড়েছে তাকে ছাড়ার মধ্যে বাহাদুরী নেই। সেদিন নব ধর্মের পক্ষে সায় দিয়ে গেলে অর্থ এবং রাজদত্ত সম্মানে তাঁর জীবনে কিছু অভাব হত না। কিন্তু সাংসারিক সাচ্ছন্দ্য সম্মানকে তিনি তৃণজ্ঞান করতেন। তার অবহেলিত স্বধর্মের পক্ষ নিয়ে ধর্মান্ধ জনসমুদ্রের বিরুদ্ধে তিনি দাড়ালেন পর্বতের মতো উচ্চ শিরে। তাঁর অসামান্য পাণ্ডিত্যপূর্ণ বক্তৃতায় ক্রমে জনমতের পরিবর্তন হচ্ছে দেখে, খৃষ্টান পুরোহিতের দল তাদের শিশুসুলভ যুক্তি-তর্ক নিয়ে তার বিরুদ্ধে দাড়াতে না পেরে শেষ পর্যন্ত কুটিল পথ আশ্রয় করলেন, ধর্মোক্ষ্মত্ত পশুপ্রকৃতির একদল লোককে লেলিয়ে দিলেন তাকে হত্যা করার হাইপেসিয়ার নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড খৃষ্টধর্মের এবং খৃষ্টানজাতিকে কলঙ্ক কালিমা প্রলিপ্ত করেছিল।

 এই যুগে পৃথিবীর আর একপ্রান্তে চীনদেশে বিদুষী নারীদের প্রভাব সম্বন্ধে কিছু না বললে অন্যায় হবে। প্রাগৈতিহাসিক চীনের নারীতন্ত্র সমাজ সভ্যতাবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হচ্ছিল, সেখানে দীর্ঘকাল পর্যন্ত মেয়েরা রাজসভার