পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

তার পুস্তকাগারে বহুব্যয়ে সংগৃহীত হয়েছিল। এই পুথি সংগ্রহের কাজে তাঁর প্রধান সহায় ছিলেন বহু শাস্ত্রবিশারদা এবং সুগায়িকা ‘কাফফা। তিনি হাকামের বিদুষী কার্য সম্পাদিকা (সেক্রেটারী) ছিলেন, তাঁর রচনামাধুর্য, অঙ্কশাস্ত্র, ব্যাকরণ প্রভৃতি বিষয়ে প্রগাঢ় পাণ্ডিত্য হাকামকে মুগ্ধ করে। ছিল। সুকবি ফাতেমা, লেখিকা আয়শা এই সময়ে স্পেনদেশে আরবী সাহিত্যে সুসাহিত্যিক। বলে খ্যাতি লাভ করেন। সুপণ্ডিত নরপতি হাকামের সব চেয়ে প্রিয়পাত্রী ছিলেন ‘রজিয়া’ নাম্নী এক অসামান্য প্রতিভাশালিনী বিদুষী, হাকাম তাঁকে সৌভাগ্যসেতারা’ উপাধি দিয়েছিলেন। সেভিল নগরে মরিয়ম নাম্নী এক বিদুষী বহু সম্রান্ত পরিবারের মেয়েকে বিবিধ বিষয়ে শিক্ষা দিতেন। একাদশ শতাব্দীতে সেভিলরাজ “মুতামিদ’ ‘রূমাইকীয়া নাম্নী এক ক্রীতদাসীর কবিত্বশক্তিতে মুগ্ধ হয়ে তাকে বিবাহ করেন।

 দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে ‘জয়নাব-উম্মুল-মুয়াইয়েদ আরবদেশে ব্যবহারশাস্ত্রজ্ঞা রূপে খ্যাতি লাভ করেছিলেন। শতাব্দীর শেষদিকে সুলতান সালাউদ্দীনের রাজত্বকালে আবুলফরোজ দুহিতা ‘তকীয়া’ “হাদীশ” সম্বন্ধে প্রকাশ্যে বক্তৃতা দিতেন এবং সুললিত ভাষায় কবিতা রচনা করতেন।

 ভারতবর্ষে দ্বাদশ শতাব্দীর শেষভাগে কাকতীয় রাজকন্যা রুদ্রাম্বা স্বাধীনভাবে রাজ্য শাসন করে গেছেন। তিনি নিজে সুপণ্ডিত এবং রাজনীতিজ্ঞা ছিলেন। তাঁর উৎসাহে তাঁর রাজ্যে ধর্মচর্চা, জ্ঞানচর্চা, কলাচর্চা এবং শক্তিচর্চা সমভাবেই প্রজাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল এবং প্রভূত উন্নতি লাভ করেছিল।