পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৬
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

 “ওগো কেতকি, তোমার পাতার সহস্র কাঁটা কাউকে কাছে ঘেঁসতে দেয় না, রেণুতে অন্ধকার তোমার দেহে মধুর খোঁজ পর্যন্ত নেই। ভ্রমর কেবল সুগন্ধ রসের রসিক বলেই তোমার এত দোষ দেখেও দেখে না।”

 কবি সীতার দ্ব্যর্থবোধক কবিতাটিতে এক অর্থে চন্দ্রকে উদ্দেশ ক’রে এবং অপর অর্থে ভীরু প্রণয়ীকে উদ্দেশ ক’রে বিদগ্ধ বনিতার উক্তি পাওয়া যায়:

“মাভৈঃ শশাঙ্ক মম সীধুনি নাস্তি রাহুঃ।
খে রোহিণী বসতি কাতর কিং বিভেষি॥
প্রায়ো বিদগ্ধবনিতা-নব-সঙ্গমেষু।
পুংসাং মনঃ প্রচলতীতি কিমত্র চিত্রম্‌॥”

“হে শশাঙ্ক, তুমি ভয় কোরো না, আমার এই মদের মধ্যে রাহু নেই (আমার স্বামী অনুপস্থিত) রোহিণীও আকাশে বাস করছেন (তোমার পত্নীও অনেক দূরে)। হে কাতর ব্যক্তি, তুমি কেন ভয় পাচ্ছ? শিক্ষিতা মেয়েদের সঙ্গে নূতন আলাপে পুরুষের মন চঞ্চল হ’য়েই থাকে, এতে বিচিত্র কি আছে?”

 কবি ত্রিভুবনসরস্বতীর একটি রাজস্তুতি এই:

“শ্রীমদ্‌রূপবিটঙ্কদেব সকল-ক্ষ্মাপাল-চূড়ামণে
যুক্তং সঞ্চরণং যদত্রভবতশ্চন্দ্রেণ রাত্রাবপি।
মা ভূত্বদ্বদনাবলোকনবশাদ্ব্রীড়া-বিলক্ষঃ শশী
মা ভূচ্চেয়মরুন্ধতী ভগবতী দুঃশীলতা-ভাজনম্‌॥”

 “সমস্ত নরপতিগণের চূড়ামণি স্বরূপ হে পরম সুন্দর মহারাজ, তুমি যে রাত্রে চাঁদের সঙ্গে ঘুরে বেড়াও এ কাজ তোমারই উপযুক্ত। কেবল দেখো, যেন তোমার মুখ দেখে চাঁদ লজ্জায়