পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী
৭১

 “আনন্দ লতিকা” রচনা কালে একদিন পণ্ডিত কৃষ্ণনাথ সন্ধ্যা হইতে শেষ রাত্রি পর্য্যন্ত বসিয়া নায়িকার রূপ বর্ণনা করিতেছিলেন। ইহা দেখিয়া বৈজয়ন্তী দেবী তাঁহার স্বামীকে বল্লেন,—“এত সময় ধ’রে তুমি স্ত্রীলোকের রূপ বর্ণনা ক’রছো! দেখ আমি একটা শ্লোকে তোমার নায়িকার তিন অঙ্গ বর্ণনা ক’রে দিচ্ছি।” এই বলে তিনি “আনন্দ লতিকা”র জন্য এই শ্লোকটী লিখে দিলেন:

“অহিরয়ং কলধৌতগিরিভ্রমাৎ
স্তনমগাৎ কিল নাভিহ্রদোত্থিত।
ইতি নিবেদয়িতুং নয়নে হি যৎ
শ্রবণ সীমনি কিং সমুপস্থিতে॥”

 পণ্ডিত কৃষ্ণনাথ উক্ত গ্রন্থের সহকারিণী বলে তাঁর স্ত্রীকে স্বীকার করেছেন। উক্ত গ্রন্থে লিখিত আছে,—

“আনন্দ লতিকা গ্রন্থো যেনাকারি স্ত্রিয়া সহ।”

 শুনা যায় একদিন কৃষ্ণনাথ তাঁর ছাত্রদের একখানি প্রাচীন দর্শনশাস্ত্র পড়াতে গিয়ে তার এক স্থানে লিখিত,—“অত্রতু নোক্তং তত্রাপি নোক্তম্‌”-এর ব্যাখ্যা করলেন,—“এ স্থানেও বলা হয় নাই ও স্থানেও বলা হয় নাই।” কিন্তু এই পাঠটী সুসঙ্গত না হওয়াতে, তিনি এই অর্থে সন্তুষ্ট হতে পারলেন না। যথার্থ অর্থ নির্ণয় করবার জন্য তিনি চিন্তা করতে লাগলেন। এদিকে বৈজয়ন্তী ছাত্রের মুখে শুনামাত্র পাঠের যথার্থ অর্থ বুঝে ছিলেন। তিনি পুস্তকখানি খুলে এর পদচ্ছেদ করে—“অত্রতু ন উক্তং তত্র অপি ন উক্তম্‌”