পাতা:সাহিত্য-মীমাংসা - বিষ্ণুপদ ভট্টাচার্য্য.pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> २ সাহিত্য-মীমাংসা ভারতীয় সাহিত্য-মীমংসার মুখ্য উদাহরণরূপে উদ্ধৃত হইয়াছে ; কিন্তু র্তাহীদের যে সকল নির্দেশ, তাহা যে কোনও সাহিত্যে সমানভাবে প্রযোজ্য । সংস্কৃত উদাহরণ কেবলমাত্র আকস্মিক । উহার স্থলে জগতের যে কোনও সাহিত্যের কাব্য ও নাট্যগ্রন্থ হইতে উদাহরণ দেখাইলেও কোনও ক্ষতি হইত না। ভরতের নাট্যশাস্ত্রের মুল অঙ্কুশাসনগুলি যে কেবল ভারতীয় সংস্কৃত নাটকের ক্ষেত্রেই উপযোগী তাহা নহে, যে কোনও সভ্যজাতির নাট্যসাহিত্যের গঠনপ্রণালী (architectonics) বিচার করিতে হইলে তাহাদের উপযোগিতা কিছুমাত্র কম বলিয়। বোধ হইবে না। ভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গীর ইহাই প্রধান বৈশিষ্ট্য। তাহার দর্শনে শিল্পে সাহিত্যে এই বিশ্বমানবতা সমানভাবে লক্ষণীয়। প্রাচীন ভারতীয় মন ক্ষুদ্র দেশের এবং কালের গণ্ডিকে উপেক্ষা করিয়া তাহার বহু উধেব উঠিতে শিথিয়াছিল, যেখান হইতে নিম্নের সমস্ত সীমা ও ব্যবধান মিলাইয়া যাইত এক অসীম সমগ্রতার মধ্যে । আজিকার দিনে ভারতীয় সমালোচনা-সাহিত্যের অনুশীলনের ইহাই সর্বপ্রধান প্রয়োজন বলিয়া বোধ হয় । আধুনিক ইউরোপীয় বিচারভঙ্গীর সহিত প্রাচীন ভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গীর সংমিশ্রণ ঘটাইতে হইবে ; ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সমষ্টিগত সমগ্রতার উপলব্ধি করিতে হইবে ; জাতীয়তা ও যুগধর্মের সহিত সর্বজনীন ও সার্বকালিক সত্য—সাহিত্যের মধ্য দিয়া যাহার বাহ প্রকাশ, তাহাকে সর্বাস্তঃকরণে স্বীকার করিতে হইবে । তবেই সাহিত্য-মীমাংসার যথার্থ উদ্দেশু সাধিত হইবে—ষ্ট হাই বিশ্বাস ।