পাতা:সাহিত্য-মীমাংসা - বিষ্ণুপদ ভট্টাচার্য্য.pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্যের লক্ষণ সাহিত্যের লক্ষণ কি। এ সম্বন্ধে আচার্যগণের মধ্যে নানা প্রকার মতভেদ লক্ষিত হয়। কেবলমাত্র শব্দই কি সাহিত্য অথবা কেবলমাত্র অর্থ, কিংবা শব্দ ও অর্থের পরস্পর সংহতি ? এখানে বলা বাহুল্য যে, যখন শব্দ ও অর্থকে স্বতন্ত্রভাবে ‘সাহিত্য’ বলিয়া গণনা করা হয়, তখন তাহদের প্রাধান্তই মুখ্যভাবে অভিপ্রেত। কেবলমাত্র শবকে যাহারা ‘সাহিত্য’ বলেন, তাহারা অর্থ হইতে প্রাধান্য লক্ষ্য করিয়াই ঐ রূপ বলিয়া থাকেন। অর্থের ক্ষেত্রেও সেই একই কথা । কেননা, শব্দ ও অর্থকে কখনও বিশ্লিষ্ট করা যায় না, তাহারা অবিচ্ছেদ্য। প্রাচীন বৈয়াকরণ আচার্য ভগবান ভর্তৃহরি বলিয়াছেন— জগতে এমন কোন ও বিজ্ঞান সম্ভবপর নয়, যাহার সহিত শব্দ অমুস্থ্যত হইয়া নাই। সমস্ত জ্ঞানই শব্দের দ্বারা অকুবিদ্ধ হইয়া প্রকাশিত হইয়া থাকে । , এই মতবাদ কতদূর সত্য, তাহ আমাদের ব্যক্তিগত জ্ঞানধারা বিশ্লেষণ করিয়া দেখিলেই বুঝা যাইবে । যখনই আমরা কোনও অর্থ চিন্তা করি, তখনই আমাদের সেই অর্থের বাচক শব্দেরও জ্ঞান হইয়া থাকে । ইহা অনুভবসিদ্ধ। সেইজন্যই মহাকবি কালিদাস বলিয়াছেন—“বাগথাবিব সম্পক্তে।’ শব্দই জ্ঞান মাত্রের একমাত্র প্রকাশক। অর্থ জ্ঞান হইল, সে যেরূপেই হউক-না কেন, প্রত্যক্ষই হউক, অকুমানই হউক, অথবা স্মরণই হউক, অথচ বাচক শব্দের জ্ঞান হইল না— এইরূপ কল্পনা অযৌক্তিক । ১. “ন গোহস্তি প্রত্যয়ে লোকে যঃ শামুগমাদৃতে । অমৃবিদ্ধমিব জামং সৰ্বং শব্দেন ভাসতে ॥”—বাক্যপদীয় ।