পাতা:সাহিত্য-মীমাংসা - বিষ্ণুপদ ভট্টাচার্য্য.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য ও রসতত্ত্ব F ૨ (t রসামুভবের নিগূঢ় তথ্যই বা কি ? কাব্যপাঠ বা অভিনয়দর্শন হইতে যে রসবোধ হইয়া থাকে, তাহ। কি শুধু আনন্দেরই জনক, না, দুঃখময় অনুভূতিও উহা হইতে উৎপন্ন হইয়া থাকে ? যদি আনন্দই রসামুভূতির ফল হয়, তবে সে আনন্দের স্বরূপ কি ? সাধারণ লৌকিক আনন্দ বা হর্ষ হইতে উহার কি কোনও বৈলক্ষণ্য আছে ? রসের শ্রেণীবিভাগ সম্ভবপর কি না ? যদি সম্ভবপর হয়, তবে সাহিত্যিক রসের সংখ্যা কয়টি ? ঐরুপ বিভিন্নতার কারণই বা কি। এ সকল প্রশ্নই অতি দুরূহ। প্রাচীন সংস্কৃত আলঙ্কারিকগণ র্তাহাদের মনঃসমীক্ষণ বা অসুব্যবসায় (introspection) বলে তাহীদের স্ব স্ব মানসিক বৃত্তিগুলির নিগুঢ় বিশ্লেষণ করিয়া রসের স্বরূপ মীমাংসায় প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন। র্তাহারা তখন আধুনিক মনোবিজ্ঞানসম্মত পরীক্ষণপদ্ধতির সাহায্যে বিভিন্ন মানবের মনোবৃত্তির সূক্ষ্ম পরিমাপ, তাহার গতি ও প্রকৃতি নির্ণয় করিতে সমর্থ হন নাই । দুরূহ রসতত্ত্বের গবেষণার ক্ষুরধার পথে র্তাহাদের একমাত্র অবলম্বন ছিল আত্মসমীক্ষণশক্তির তীক্ষত ইহারই উপর সম্পূর্ণ নির্ভর করিয়া তাহারা অগ্রসর হইয়াছিলেন। তাহদের প্রাচীন রীতির সহিত আধুনিক মনোবৈজ্ঞানিক আবিষ্কার ও গবেষণাপদ্ধতির সংযোগ ঘটাইতে পারিলে রসতত্ত্বের একটা আধুনিক রুচিসঙ্গত বৈজ্ঞানিক ভিত্তি উদ্ভাবন করা সম্ভবপর হইতে পারে । রসতত্ত্বের সর্বপ্রথম লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হইতেছে এই যে, ইহা শব্দের ‘অভিধা’ শক্তির (function of denotation) দ্বারা প্রকাশু নহে। 'রস'কে কখনও কোনও উপায়েই স্পষ্ট কথায় প্রকাশিত করা যায় না । হাস্যরসের অভিনয় দেখিতে গিয়া যদি অভিনেতৃবর্গের পরস্পরের মুখে কেবলই শুনা যায়—’ইহা বড় হাসির কথা’, ‘আমার বড় হাসি পাইতেছে’, তখন প্রেক্ষকবর্গের বদনকমল হইতে যে সকল অমৃতময় বাণী নটগোষ্ঠীর উদ্দেশে বর্ষিত হইতে থাকে, তাহা আদেী হাস্যরসের অনুরূপ নহে। বাইবেলে মাছে, বিধাতা আদেশ করিলেন, ‘আলোক হউক, আমনই আলোকের দ্বারা বিশ্ব উদ্ভাসিত হইল। কবি র্তাহার