পাতা:সাহিত্য-মীমাংসা - বিষ্ণুপদ ভট্টাচার্য্য.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VG) e সাহিত্য--মীমাংসা প্রতি কারণ নহে। উদ্দীপন-বিভব না থাকিলে আমাদের চিত্তবৃত্তি আদৌ জন্মলাভ করিত না—এইরূপ দাবি করা চলে না। যাহা আস্ফট ছিল তাহাকে ফুট করা, যাহা অর্ধপ্রস্বগু ছিল তাহাকে সম্পূর্ণ জাগ্রত করা, যাহ। মুকুলিত ছিল তাহাকে ফলিত করা, যাহা ছিল স্তিমিত তাহাকে সন্ধুক্ষিত করিয়া তোলাই উদ্দীপন-বিভাবের উপযোগিতা। ইংরেজীতে ইহাকে auxiliary cause বা সহকারি-কারণ বলা চলে । যেমন, সাহিত্যে প্রায়শই বসস্তের আবির্ভাব, প্রেমসঙ্গীত, নায়কমায়িকার অভিসারসজ্জার বর্ণনা শুঙ্গাররসের অঙ্গরূপে লক্ষিত হইয়া থাকে। এ সমস্তই নায়কনায়িকার প্রীতিকে অধিকতর উজ্জীবিত করিয়া তোলে,—নায়িকার চরণেব নৃপুরনিক্কণ, তাহার বলয়ের শিঞ্জিতধ্বনি প্রতীক্ষমাণ নায়কের হৃদয়কে চঞ্চল করিয়া তোলে। এই সকলই অনুভবসাক্ষিক। বর্ষাসমাগম বিরহের উদ্দীপন-বিভাব। কালিদাস তাহার মেঘদূতের অনবদ্য মন্দাক্রাস্তায় ইহার উদ্বোধন চিরস্মরণীয় করিয়া গিয়াছেন, যক্ষের বিরহবেদনাকে উদ্দীপিত করিবার জন্য—“আকুল করেছ শ্রাম সমারোহে হৃদয়সাগরউপকূল ।” অতএব প্রত্যেক রসেরই একটি উপযুক্ত পরিবেশ আছে— এই পরিবেশের উদেখা প্রতিপাদ্য রসের উৎকর্ষসাধন, এবং পরিবেশেরই আলঙ্কারিক সংজ্ঞা ‘উদ্দীপন-বিভব । অতএব, বিভাবের স্বরূপ বুঝা গেল। এক্ষণে ‘অমুভাবে’র স্বরূপ আলোচনীয়। ‘অমুভাব’ শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হইতেছে পশ্চাৎ-( অতু )ভাবিত। ( ভাব ) । প্রশ্ন হইতে পারে ; এই পাশ্চাত্ত্য বা পরভাবিত কাহাকে অপেক্ষা করিয়া ? উত্তরে আলঙ্কারিকগণ বলিয়া থাকেন—লৌকিক ভাব বা চিত্তবৃত্তিকে অপেক্ষা করিয়া। ব্যাবহারিক জগতে আমাদের হৃদয়ে যখন কোনও ভাব উদগত হয়, যেমন—ক্ৰোধ ভয় শোক প্রভৃতি, তখন সেই ভাববিকৃতির অব্যবহিত পরেই শারীরিক বিকার (physical modification) পরিলক্ষিত হইয়া থাকে। ক্রুদ্ধ ব্যক্তির নেত্র আরক্ত হইয়া উঠে, নাসারন্ধ মূলত হয়, হস্তের আস্ফালন দৃষ্ট হইয়া থাকে। এই সকল শারীরবিকৃতি