পাতা:সাহিত্য-মীমাংসা - বিষ্ণুপদ ভট্টাচার্য্য.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩২ সাহিত্য-মীমাংসা দ্যায়সূত্রে বলিয়াছেন, "বীতরাগজন্মাদর্শনাং” । যতদিন রক্তমাংসগঠিত দেহপিঞ্জরের মধ্যে আত্মা বদ্ধ হইয়া থাকিবে, ততদিন পূর্বজন্মের বাসনা বা impression বা প্রবৃত্তিসমূহ তাহার সহিত নিত্য সমবেত হইয়াই থাকিবে । পুনর্জন্মবাদ স্বীকার না করিলেও যদি পাশ্চাত্য বৈজ্ঞানিকগণের ন্যায় মানবের ক্রমবিবর্তনবাদ স্বীকার করাও যায়, তথাপি দীর্ঘকালের অভিব্যক্তিবশে যে সকল ভাবনা বা বাসনা মানব-মনে দৃঢ়মূলভাবে রোপিত হইয়া গিয়াছে, তাহারা বৃদ্ধ হইতে শিশুতে, এক যুগ হইতে অন্য যুগে, সঞ্চারিত হইবেই— তাহাদের বিলোপসাধন কোনও ক্রমেই মানবের সাধ্যায়ত্ত নহে। তাহদের কতকগুলি আমাদের চিত্তের উপরিস্তরে ভাসমান। তখন তাহাদের সত্তা জ্ঞানালোকের দ্বারা প্রকাশিত হইয়া থাকে । আবার কতকগুলি হয়তো মানবমনের গভীরতম স্তরে অজ্ঞাতভাবেই আপন সত্তা বজায় রাখিয়া চলে— তাই বলিয়া তাহাদিগকে অপহর করা যায় না। ইহা Freud-প্রমুখ মনোবৈজ্ঞানিকগণের সুচিস্তিত সিদ্ধান্ত । আমাদের প্রাচীন দার্শনিক আচার্যগণ বহুপূর্বেই এই সুহ্ম তত্ত্বটি আবিষ্কার করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন। নবজাত শিশুর অপরিচিত পরিবেশ দর্শনে রোদনের মূলে আছে পূর্বজন্মসঞ্চিত ভয়াত্মক বাসনা (instinct of fear) । এইভাবে পূর্বজন্মের অমুভবজনিত সংস্কার-(impression)-রূপেই হউক, অথবা মানব-সমাজের দীর্ঘযুগপ্রবাহী ক্রমবিবর্তনের ফলেই হউক, ভয়, শোক, ক্রোধ, অনুরাগ, হাস, বিস্ময়, জুগুপ্ত, উৎসাহ, শঙ্কা, গ্লানি, অস্থয়া, উদ্বেগ, নিশ্চয়—মানবের মনোজগৎ এইরূপ শত শত বিচিত্র বাসনার দ্বারা নিরস্তর শবলিত হইয়া আছে । এই চিত্তবৃত্তিগুলিকে সাহিত্যমীমাংসকগণ দুইটি পৃথক শ্রেণীতে বিভক্ত করিয়াছেন, একটির নাম ‘স্থায়ী’, অপরটি ‘সঞ্চারী’ । আলংকারিকগণের মতে স্থায়িভাবের সংখ্যা আটটি—রতি, হাস, শোক, ক্রোধ, উৎসাহ, ভয়, জুগুপ্ত এবং বিস্ময় । স্থায়ী শব্দের ইংরেজী প্রতিশব্দ permanent | **Roots of assebtái Tl hotf-sto (transient states of mind ) sites