পাতা:সাহিত্য-মীমাংসা - বিষ্ণুপদ ভট্টাচার্য্য.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 e সাহিত্য-মীমাংসা কোনও সহৃদয়ের চিত্তেই মুখ্যভাবে রিসে’র উৎপত্তি হয় না। তবে রসের মুখ্য বা প্রকৃত আশ্রয় কে ? কবি, সহৃদয়, অমুকৰ্তা নট, অথবা অমুকার্য দুন্যস্ত শকুন্তলা প্রভৃতি নায়ুকনায়িক ? ঐতিহাসিক (অথবা কাল্পনিক বা পৌরাণিক যাহাই বলা হউক না কেন ) দুষ্যস্ত এবং শকুন্তলার চরিত্র অবলম্বন করিয়া যেখানে নাট্যের অভিনয় হইতেছে, সেখানে দুষ্যস্ত শকুন্তলা প্রভৃতি পাত্রপাত্রীগণ, ইংরেজীতে যাহাদের ড্রামাটিস্ পার্সনি (dramatis persona) বলা হইয়া থাকে, তাহারা অমুকার্য, এবং যে সকল অভিনেতা তাহদের ‘রূপ’ গ্রহণ করেন, ঐ সকল চরিত্রসমূহের ‘অনুকরণ করিয়া প্রেক্ষকগোষ্ঠীর মনোরঞ্জন করেন, তাহারা ‘অকুকর্তা । কেননা, নাট্য লোকবৃত্তেরই অনুকরণ মাত্র । ভরতাচার্য নিজেই বলিয়াছেন : লোকবৃত্তামুকরণং নাট্যমেতদ ভবিষ্যতি । স্বতরাং দুন্যস্ত, শকুন্তলা প্রভৃতি পত্রিপাত্রী নাট্যে ‘অমুকার্য, এবং কুশীলবগণ সেই সকল ঐতিহাসিক অথবা পৌরাণিক চরিত্রেরই ‘অমুকৰ্তা' । এক্ষণে, কবি, সহৃদয়, অমুকার্য এবং অনুকর্ত, এই চারিজনের মধ্যে রসের মুখ্য আশ্রয় কে ? ভট্টলোল্লট বলেন : ‘অমুকার্য’ই প্রকৃতপক্ষে রসের আশ্রয়, তিনিই যথার্থ রস অনুভব করিয়া থাকেন। শকুন্তলা-বিষয়ক যে শৃঙ্গাররস উহা মুখ্যত ঐতিহাসিক (অথবা পৌরাণিক ) দুৰ্য্যন্তের পক্ষেই সম্ভবপর। এবং ঐ 'রস' বিভাব আকুভাব এবং সঞ্চারিভাবের পরস্পর সংযোগে? সেই ঐতিহাসিক দুষ্যস্তের হৃদয়ে উৎপন্ন হইয়াছিল। লোল্লটাচার্যের মতে—রসস্থত্রের অন্তর্গত ! নিষ্পত্তি পদটির অর্থ উৎপত্তি অথবা প্রোডাকশন। উৎপত্তি’ বলিতে আমরা 1‘অভূত-প্রাদুর্ভাব বুঝিয়া থাকি। যাহা ছিল না তাহা হওয়া’—ইহার নাম 'অভূত-প্রাদুর্ভাব, ইহারই নাম উৎপত্তি। মৃত্তিকা হইতে ঘটের উৎপত্তি’ रा, কেন-ন, ঘট পূর্বে ছিল না, ইহা একটি সম্পূর্ণ নূতন পদার্থ। মৃত্তিক ইহার উৎপাদক কারণ। সেইরূপ রস ও একটি অপূর্ব বস্তু। ঐতিহাসিক দুৰ্যস্তের চিত্তে যে রসের প্রাদুর্ভাব উহা অভূত-প্রাদুর্ভাব’। পূর্বে উহার অস্তিত্ব ছিল না, সেই জন্য উহা অপূর্ব। অতএব রসনিষ্পত্তি’ শব্দের অর্থ t

! {