বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:সাহিত্য-সংহিতা (নব পর্য্যায়, পঞ্চম খন্ড).pdf/৪২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৌষ, মাঘ, ১৩২৩ । ] প্ৰকৃতির কৌশল । SONN এই প্ৰকার বংশবৃদ্ধি ক খুনই সৃষ্টি রক্ষার অনুকুল নয় । সুইডেনে কয়েক বৎসর পূৰ্ব্বে এই প্ৰকার একটি ঘটনী দেখা গিয়াছিল। আমাদের শশক বা কাঠবিড়ালের ন্যায় লেমিং নামে এক প্রকার উদ্ভিজ্জভোজী ক্ষুদ্র প্রাণী। ঐ দেশে সৰ্ব্বত্র দেখা যায়। হঠাৎ দুই বৎসর সুজন্ম হওয়ায় প্রচুর আহাৰ্য পাইয়া ইহারা সংখ্যায় এত বাড়িয়া গিয়াছিল যে, দেশে শস্যহানির সস্তাবনা হইয়াছিল। কৃষকেরা এই উপদ্রবের শান্তির জন্য নানা উপায় অবলম্বন করিল, কিন্তু, তাহাতে বিশেষ ফল পাওয়া গেল না । শেষে প্ৰাকৃতিক বিধানেই এই উপদ্রবের শাস্তি হইল ; অকস্মাৎ এই ক্ষুদ্র প্রাণীদিগের মধ্যে মড়ক দেখা দিল। এবং পূর্বে যে পরিমাণে ঘাস-পাতা জন্মিত তাহাও কমিয়া আসিল । এই প্রকারে কতক লেমিং পীড়ায় এবং কতক অনাহারে মরিয়া যাওয়ায় দেশের শস্যহানি রোধ প্ৰাপ্ত হইল। এই ঘটনার মধ্যে বিস্ময়কর ব্যাপার কিছুই নাই। এই প্ৰকার উদাহরণ সংগ্রহের ୧୭ সুইডেনের পশুপক্ষীদিগের ইতিহাস অনুসন্ধান করিবার ও প্রয়োজন হয় না । আমাদের এই বাঙ্গালা দেশেরই শাস্তক্ষেত্রে হয় তা পূর্বোক্ত ব্যাপার সংঘটিত হয়। বিশেষ কারণে কোন প্ৰাণি জাতির অত্যধিক অভু্যদয় হইলে যে সঙ্কট উপস্থিত হয়, প্ৰকৃতি কি প্ৰকার কৌশলে তাহার প্রতিবিধান করেন, ইহাই আমাদের চিন্তার বিষয়। উদ্ভিজ্জভোজী প্রাণীরা কেবল তৃণ পত্ৰ আহার করিয়া জীবিত থাকে। আবার মাংসাশী প্ৰাণিগণ কেবল উদ্ভিজ্জভোজী প্ৰাণীদিগের মাংসে জীবন ধারণ করে। কাজেই একের অভাবে অপরের জীবিত থাকা অসম্ভব হইয়া পড়ে । খাদ্য ও খাদকের মধ্যে যাহাতে নিয়ত সামঞ্জস্য থাকে, স্বভাবতঃই তাহার ব্যবস্থা আছে । যদি কোনও অকস্মিক কারণে এই সামঞ্জস্য নষ্ট হয়, তখন জীবনংগ্ৰাম অতি ਬ੧ হইয়া দাড়ায় এবং তাহারই ফলে দেশে হাহাকার পড়িয়া যায়। কিন্তু এই সংগ্ৰাম রোধ করিয়া শান্তি সংস্থাপনের অধিকার মানুষ্যের নাই ; স্বয়ং প্ৰকৃতিই শাস্তির বিধাত্রী । প্ৰাণীর মৃত্যুর সহস্ৰ দ্বার নিয়তই উন্মুক্ত রহিয়াছে। কতকগুলি দুর্বল প্ৰাণী প্ৰবল শত্রুর হস্তে জীবন বিসর্জন করে ; কতকগুলি আবার আকস্মিক প্ৰাকৃতিক উৎপাতে মরিয়া যায়। সন্তান প্রসবু করিয়া প্ৰসুতি নিজের সন্তানদিগকে নিজেই ভক্ষণ করিতেছে, এ প্রকার দৃষ্টান্ত ও কীট পতঙ্গাদিগের মধ্যে বিরল নহে। কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয়, এই প্রকারে দলে দলে জীবন বিসর্জন দেওয়া সতেঁও কোনও