পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা চতুর্থ খণ্ড.pdf/২৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নাট্যকার ও নব-ছন্দ-প্ৰবৰ্ত্তক 8& নাই। সেই প্রথম অভিনয়ের সময় আমরা অভিনেতা ও অভিনেত্রী গণের মুখে উক্ত ছন্দের উচ্চারণ ও প্রয়োগাদি যেরূপ গুনিয়াfছলাম, তাহা আজিও মনে জাগিয়া রহিয়াছে । সেই উচ্চারণ ও প্রয়োগাদিকে আমরা মেঘনাদবধ কাব্যের নূতন ও মুশর অঙ্গ বলিয়া স্বীকার করি । অভিনয়ুকাৰ্বিদিগের অভিনয়কালে মেঘনাদ বধের চতুর্দশাক্ষরাত্নক অমিত্রাক্ষরচ্ছন্দ, অঙ্গভঙ্গি ও বাগ ভঙ্গির অযুগত হইয়া, আমাদের কর্ণে কেমন আর একতবু নুতন ছন্মের ছাচ গড়িয়া দিয়াছিল । তখন বোধ হইয়া ছিল, যেন মাইকেলের অমিত্রাক্ষর ছন্দ হইতে আর এক প্রকার অমিত্রাক্ষর ছন্ম প্রস্থত তইতেছে । সেই অভিনয়িক চন্দের পক্ষপাতী হইয়া, আমি এক সময়ে বঙ্গ-রঙ্গ-ভূমির ভূতপূৰ্ব্ব অধ্যক্ষ ও অসাধারণ নট-চুড়ামণি eবাবু শরচ্চন্দ্র ঘোষ মহাশয়কে, ঐরূপ ছন্দের নাটক সৃষ্টি করিয়া অভিনয় কfরতে অতুরোধ করি, তা হাতে তিনি বলেন যে, "এখন মাইকেলের অমিত্রাক্ষরই চলুক ; ক্রমে ক্রমে পাকিয়া কিছু কাল পরে রঙ্গ-ভূমির অভিনেতারা এই মাইকেলী ছন্দ হইতে অভিমরিক ছন্দের মৌখিক কবি হইয়া অভিনয় করিতে পাব্লিবেন ।” ইংলণ্ডেও এইরূপ অবস্থা ঘটিয়াছে । শরচ্চন্দ্র বাবুর সেই কথা আমার মনে জাগিয়া ছিল । এখন দেখিতেছি, ফলে ও তা হাই দাড়াইতে চলিল। শুভক্ষণে মধুসূদনের অমিত্রাক্ষরচ্ছদ দেখা দিয়াছিল, এবং অভিনয়ুক্ষেত্রে অভিনীত হইয়াfছল, নঠিলে আধুনিক “ভাঙা অমিত্ৰাক্ষর ছন্দ" বাঙ্গালায় হইত কি ন সন্দেহ । এই ছুন্দ অভিনয়িক নাটকের পক্ষে “জলবৎ তরল” এবং লেখকের পক্ষেও তাছাই । লোকের অনুরোধে বা নিজের ইচ্ছায় দুই চারি দিনের মধ্যে এক একখানা বড় বড় নাটক পদ্যে লিখিতে হইলে এই *sলবং তরল” ছন্দই—এই অমিত্রাক্ষর-ভাঙা অমিত্রাক্ষর ছন্দই— বিশেষরূপে উপযোগী স্বতরাং এই হরধচুৰ্ভঙ্গ নাটকের অধিকাংশ স্থলেই ইহারই অনুসরণ করা হইয়াছে।