পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চারিত্রিক বিশেষত্ব $$ቖ অপরিচিতের দুখে অভিভূত হইয়া তৎক্ষণাৎ তাহাকে আশাতীত সাহায্য করিয়াছেন, বহু অনাথ বিধবার প্রতিপালনে এবং অসংখ্য দরিদ্র ছাত্রের বই, কাপড় ও মাহিনী যোগাইতে মাসে মাসে অকাতরে অর্থব্যয় করিয়াছেন,—এইরূপ বহু কথা সকল জীবনীকারই লিপিবদ্ধ করিয়াছেন। এই সকল কাহিনী হইতে ঈশ্বরচন্দ্রের প্রাণ যে কত বড়, তাহ জানিতে পারি। ফরাসী দেশ হইতে কাতরভাবে সাহায্য প্রার্থনা করিয়া কবি মধুসূদন দত্ত বিদ্যাসাগরের নিকট যে পত্র প্রেরণ করেন, তাহাতে বলিতেছেন, “যাহার নিকট আমার প্রার্থনা জ্ঞাপন করিতেছি, প্রাচীন ঋষির জ্ঞান ও প্রতিভা, ইংরেজের কৰ্ম্মশক্তি, এবং বাঙালী মায়ের হৃদয় দিয়া তাহার ব্যক্তিত্ব গঠিত।”* সত্যই বিদ্যাসাগরের হৃদয় বাঙালী মায়ের মতই কোমল ছিল। তিনি কাহারও কষ্ট, কাহারও ব্যথা দেখিতে পারিতেন না, তখনই তাহ দূর করিবার চেষ্টা করিতেন। তাই বিধবার অসহ বৈধব্য-যন্ত্রণার প্রতিকারকল্পে তিনি নিজের সকল শক্তি, সকল জ্ঞান প্রয়োগ করিয়াছিলেন। করুণ এবং উদারহৃদয় জনহিতৈষী ও সমাজসংস্কাররূপে ঈশ্বরচন্দ্র সকলের নিকটই সুপরিচিত। এই দিক্ দিয়া বিদ্যাসাগরের মহৎ জীবনের যথেষ্ট আলোচনা হইয়া গিয়াছে, আমরা সে-সম্বন্ধে বেশী কথা বলি নাই। শিক্ষা-বিস্তারে বিদ্যাসাগরের কৃতিত্ব কতটা এবং গ্রন্থ প্রণয়ন ও সম্পাদনে তিনি কিরূপ শক্তি নিয়োগ করিয়াছেন, সেই কথাই আমরা বিস্তারিতভাবে বলিয়াছি, এবং এ-সম্বন্ধে বিদ্যাসাগর যে-সকল সরকারী এবং বে-সরকারী চিঠিপত্রের আদান-প্রদান করিয়াছিলেন, তাহারও পূর্ণ বিবরণ দিয়াছি।

  • “The man to whom I have appealed has the genius and wisdom
of an ancient sage, the energy as an Englishman, and the heart of a

Bengali mother.”