পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চারিত্রিক বিশেষত্ব । *२४ কিরূপ কাপাইয়া গিয়াছেন, তাহা স্মরণ করিলে মন বিশ্বিত ও স্তষ্ক হয়। তিনি এক সময়ে আমাকে বলিয়াছিলেন—“ভারতবর্ষে এমন রাজা নাই, যাহার নাকে এই চটিজুতাশুদ্ধ পায়ে টক্‌ করিয়া লাথি না মারিতে পারি।” আমি তখন অমুভব করিয়াছিলাম এবং এখনও অমুভব করিতেছি যে, তিনি যাহা বলিয়াছিলেন, তাহা সত্য । তাহার চরিত্রের তেজ এমনি ছিল যে, তাহার নিকট ক্ষমতাশালী রাজারাও নগণ্য ব্যক্তির মধ্যে ।” মহতের চরণশোভিত এই চটিজুতা-মাহাত্ম্যই এই দরিদ্র, লাঞ্ছিত, আত্মবিস্তৃত জাতির মনে অনেক আশার সঞ্চার করিয়াছে, আমরা মরিতে মরিতেও বাচিয়া আছি। প্রতিভার সহিত, সাহিত্য-বুদ্ধির সহিত এই অসাধারণ চারিত্রিক তেজস্বিত ও ব্যক্তিত্ব যুক্ত হইয়াছিল বলিয়া বর্ণপরিচয়, বোধোদয়, ‘কথামালা, ‘আখ্যানমঞ্জরী, বেতালপঞ্চবিংশতি, ‘শকুন্তলা, সীতার যনবাসেই তাহার পরিচয় সম্পূর্ণ নয় ; বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ নিরোধ চেষ্টা এবং বিধবা-বিবাহ প্রবর্তনের বিরাট কীৰ্ত্তিও তাহার পর্য্যাপ্ত পরিচয় নয়। সকল গুণ মিলাইয়। তিনি এ সকলের অনেক উদ্ধে ছিলেন ; এই নিরস্তপাদপ এরণ্ডের দেশে তিনি একক নৃগ্রোধ-মহিমায় বিরাজিত ছিলেন ; শাখা-প্রশাখা-সম্বলিত বটবৃক্ষের বিশালতায় সমস্ত ক্ষুদ্রতা ও তুচ্ছতার উদ্ধে তিনি আপনাকে উৎসারিত করিয়াছিলেন। র্তাহার বিরাটত্বের পরিমাপ করিতে পারে, এমন সমসাময়িক প্রতিভাও কেহ ছিলেন না। আজ অৰ্দ্ধ শতাব্দীর ব্যবধানে দূর হইতে আমরা তাহাকে তাহার সম্পূর্ণ মহিমায় প্রত্যক্ষ করিয়া বিস্মিত হইয়া ভাবিতেছি, এই অঘটন কেমন করিয়া ঘটিয়াছিল ! পল্লীগ্রামের দরিদ্র ব্রাহ্মণের ঘরের সন্তান কোন প্রতিভাবলে এমন জ্ঞান ও শিক্ষা অর্জন করিলেন, যাহাতে সমসাময়িক সকল সামাজিক অনাচার