পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२०० প্যারীচঁাদ মিত্র চিনি বলিতেন ন!—শর্করা বলিতেন। ‘ধি’ বলিলে উহাদের বৃসনা অশুদ্ধ হইত, ‘আজ্যই বলিতেন, কদাচিৎ কেহ ঘূতে নামিতেন। চুল বলা হইবে ন-কেশ বলিতে হইবে। 'কলা বলা হইবে না,—‘রম্ভা বলিতে হইবে। ফলাহারে বসিয়া ‘দই’ চাহিবার সময় 'দধি’ বলিয়ু চীংকার করিতে হইবে। আমি দেখিয়াছি, একজন অধ্যাপক একদিন "শিশুমার’ ভিন্ন ‘গুণ্ডক শঙ্ক মুখে আনিবেন না, শ্রোতারাও কেহ শিশুমার অর্থ জানে না, সুতরাং অধ্যাপক মহাশয় কি বলিতেছেন, তাহার অর্থবোধ লইয়া অতিশয় গণ্ডগোল পড়িয়া গিয়াছিল। পণ্ডিতদিগের কথোপকথনের ভাষাই যেখানে এইরূপ ছিল, তবে তাঁহাদের লিখিত বাঙ্গাল ভাষা আরও কি ভয়ঙ্কর ছিল, তাহা বলা বাহুল্য। এরূপ ভাষায়ু কোন গ্রন্থ প্রণীত হইলে, তাহ তখনই বিলুপ্ত হইত, কেন না কেহ তাহ পড়িত না। কাজেই বাঙ্গলা সাহিত্যের কোন শ্রবৃদ্ধি হইত না । এই সংস্কৃতাহুসারিণী ভাষা প্রথম মহাত্মা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও অক্ষয়কুমার দত্তের হাতে কিছু সংস্কার প্রাপ্ত হইল। ইহঁাদিগের ভাষা সংস্কৃতাহুমারিণী হইলেও তত দুৰ্ব্বোধ্য নহে। বিশেষতঃ বিদ্যাসাগর • মহাশয়ের ভাষা অতি সুন্দর ও মনোহর। তাহার পূৰ্ব্বে কেহই এরূপ স্বমধুর বাঙ্গালা গদ্য লিখিতে পারে নাই, এবং তাহার পরেও কেহ পারে নাই। কিন্তু তাহা হইলেও সৰ্ব্বজন-বোধগম্য ভাষা হইতে ইহা অনেক দূরে রহিল। সকল প্রকার প। এ ভাষায় ব্যবহার হইত না বলিয়, ইহাতে সকল প্রকার ভাব প্রকাশ করা যাইত না এবং সকল প্রকার রচনা ইহাতে চলিত না । গদ্যে ভাষার ওজস্বিতা এবং বৈচিত্র্যের অভাব হইলে ভাষা উন্নতিশালিনী হয় না। কিন্তু প্রাচীন প্রথায় আবদ্ধ এবং বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ভাষার