পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

{}r বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় so গ্রন্থাবলীর "বিবিধ" খণ্ডে সেগুলির অধিকাংশ স্থান পাইয়াছে। এই প্রবন্ধগুলি পাঠে যোদ্ধা বঙ্কিমের একটা রূপ পাঠকের সম্মুখে স্পষ্ট হইয়া উঠে; সে রূপ শুধু স্রষ্টার নয়—পালকেরও। ১৮৭৪ খ্ৰীষ্টাব্দে লোকবৃহস্ত, ১৮৭৫ খ্ৰীষ্টাব্দে ‘কমলাকাস্তের দপ্তর’ এবং ১৮৮৪ খ্ৰীষ্টাকে ‘মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত’ পুস্তকাকারে প্রকাশিত হয়। 'কমলাকান্তের দপ্তর’ পরে (১২৯২ বঙ্গাব্দে ) পরিবদ্ধিত আকারে ‘কমলাকান্ত’ নামে বাহির হয়। বিজ্ঞানরহস্য, ‘সাম্য ও বিবিধ প্রবন্ধে এবং পরবর্তী জীবনের অনুশীলন-তত্ত্বমূলক রচনাবলীতে বঙ্কিমচন্দ্রের মনের ষে দিকৃটির পরিচয় পাই, তাহাকে তাহার গবেষণা ও অমুসদ্ধিংসাপরায়ণ গম্ভীর দিক বলা যায়। বঙ্গদর্শনের সাধারণ পাঠকের মনোরঞ্জনের জন্য এবং প্রধানত: বৈচিত্র্য সম্পাদনের জন্য সব্যসাচী বঙ্কিমকে আপাতদৃষ্টিতে অতান্ত লঘু বিষয় লইয়াও বাঙ্গ ও রসিকতার ভঙ্গীতে লেখনী ধারণ করিতে হুইয়াছে—‘কমলাকান্ত, লোকরূহন্ত’ ও ‘মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত’ বঙ্কিমচন্দ্রের বিপরীত বা ' লঘু দিকের পরিচয়। কিন্তু গোপাল উড়ের গল্প অথবা ঈশ্বর গুপ্তের সমাজবিষয়ক কবিতাগুলি যে অর্থে লঘু, বঙ্কিমচন্দ্রের এই সকল হালক রচনা সে অর্থে লঘু নহে। তাহার হাসি বা ব্যঙ্গের অন্তরালে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জাতিগত অপমান-লাঞ্ছনার জাল ও বেদনার অগ্র লুকাইয়। আছে। প্রবন্ধগুলিতে যে চরম কথাগুলি বঙ্কিমচন্দ্র বলিতে পারেন নাই, বিদ্রুপের আবরণে সে সকল কথা তিনি অতি সহজেই বলিতে পারিয়াছেন। বাংলা দেশের চিরস্কন গতানুগতিকতার বিরুদ্ধে কমলাকাষ্ঠী বঙ্কিমের এই বিদ্রোহ বাংলা-সাহিত্যে অমর হইয়া আছে । ‘কমলাকাস্ত’ বঙ্কিমচন্দ্রের বিচিত্রতম স্থষ্টি ; বস্তুত: স্বয়ং বঙ্কিমচন্দ্র