পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ংস্কৃত কলেজের পুনর্গঠন \לכ চৈতন্যোদয় হইল, বিদ্যালয়ে নিয়মিত উপস্থিতির হারও যথেষ্ট বাড়িয়া গেল । ১৮৫১ খ্ৰীষ্টাব্দের নবেম্বর মাসে সংস্কৃত কলেজে এক উন্নত প্রণালীর শিক্ষা-ব্যবস্থা প্রবর্তিত হইল। ব্যাকরণ-বিভাগ সম্পূর্ণরূপে পুনর্গঠিত হইল। পূৰ্ব্বে বোপদেবের মুগ্ধবোধ ছিল ব্যাকরণের একমাত্র পাঠ্য পুস্তক । সংস্কৃত শিক্ষার গোড়াতেই সংস্কৃতে লেখা এই দুরূহ ব্যাকরণথানি ছেলেদের পড়িতে হইত। এখানি আয়ত্ত করিতে লাগিত চার-পাচ বৎসর ; তাও ছেলেরা অর্থ না বুঝিয়াই মুখস্থ করিত। কাজেই সংস্কৃত-সাহিত্য পড়িবার সময় এই মুখস্থ বিদ্যা বিশেষ কাজে লাগিত না; দেখা যাইত, ভাষায় তাহারা আশানুরূপ অধিকার লাভ করে নাই। বিদ্যাসাগর ছেলেদের বাধাটুকু বুঝিতে পারিলেন। তিনি দেখিলেন, বাঙালী ছাত্রকে সংস্কৃত শিথাইতে হইলে বাংলায় ব্যাকরণ পড়াইতে হইবে। তিনি মুগ্ধবোধ পড়ান বন্ধ করিলেন এবং তাহার পরিবর্তে বাংলায় লেখা স্বরচিত ‘সংস্কৃত ব্যাকরণের উপক্রমণিকা’ ও ব্যাকরণ কৌমুদী ধরাইলেন। এই সঙ্গে ঋজুপাঠও পড়ান হইতে লাগিল সংস্কৃত গদ্য ও কাব্য হইতে কতকগুলি নিৰ্ব্বাচিত অংশ ঋজুপাঠে সন্নিবেশিত হইয়াছে। এই নব ব্যবস্থার ফল ভালই হইল। সাধারণ ছাত্রদের পক্ষে এই ব্যবস্থায় সংস্কৃতে মোটামুটিরূপে ব্যুৎপত্তি লাভ করিতে তিন বৎসরের বেশী সময় লাগে না । বিদ্যাসাগর সংস্কৃত শিক্ষার বাধাবিপত্তি এমনি করিয়া দূর করিলেন। অতঃপর তিনি সংস্কৃত কলেজের ইংরেজী-বিভাগ পুনর্গঠনের কাজে হস্তক্ষেপ করিলেন। দুইটি উদ্যে লইয়া সংস্কৃত কলেজ প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল ; প্রথম, হিন্দু সাহিত্যের অনুশীলন ; দ্বিতীয়, পাশ্চাত্ত্য জ্ঞানবিজ্ঞনের ক্রম-প্রচলন।