পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ংস্কৃত কলেজের পুনর্গঠন ৩৭ আলোচনা যে-সকল প্রাথমিক সত্যে পৌঁছিয়াছে, পাশ্চাত্তা বিজ্ঞানে তাহাদের পূর্ণতর বিকাশ দেখাইয়া উভয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য-বিধান করিবে।” দুঃখের বিষয়, এ বিষয়ে আমি ডাঃ ব্যালান্টাইনের সহিত অন্যমত। আমার মনে হয় না, আমরা সকল জায়গায় হিন্দুশাস্ত্র ও পাশ্চাত্তা বিজ্ঞানের ঐক্য দেখাইতে পারিব। যদি-ব ধরিয়া লওয়া যায় ইহা সম্ভব, তবুও আমার মনে হয়, উন্নতিশীল ইউরোপীয় বিজ্ঞানে তথ্য-সকল ভারতীয় পণ্ডিতগণের গ্রহণযোগ্য করা দুঃসাধ্য। তাহ্বাদের বহুকাল-সঞ্চিত কুসংস্কার দূর করা অসম্ভব। কোন নূতন তত্ত্ব, এমন কি, তাহাদের শাস্ত্রে যে তত্ত্বের বীজ আছে, তাহারই পরিবদ্ধিত স্বরূপ—যদি তাহাদের গোচরে আনা যায়, তবে তাহারা গ্রাহ করিবে না । পুরাতন কুসংস্কার তাহারা অন্ধভাবে আঁকড়াইয়া ধরিয়া থাকিবে । আরব-সেনাপতি আমরু আলেকজেন্দ্ৰিয়া বিজয় করিয়া যখন খালিফ ওমরকে জিজ্ঞাসা করিয়া পঠাইলআলেকজেন্দ্রিয়ার গ্রন্থশালার ব্যবস্থা কি করা যাইতে পারে, তখন খালিফ উত্তর দিলেন, “গ্রন্থাগারের গ্রন্থগুলি হয় কোরাণের মতের অনুযায়ী, না-হয় বিরুদ্ধ ; যদি অতুরূপ হয় ত এক কোরাণ থাকিলেই যথেষ্ট ; আর যদি বিরুদ্ধ মত হয় ত গ্রন্থগুলি নিশ্চয়ই অনিষ্টকর। অতএব ওগুলি ধ্বংস কর ।” আমার বলিতে লজ্জা হয়—ভারতীয় পণ্ডিতগণের গোড়ামি ঐ আরব খালিফের গোড়ামির চেয়ে কিছু কম নয়। তাহাদের বিশ্বাস, সৰ্ব্বজ্ঞ ঋষিদের মস্তিষ্ক হইতে শাস্ত্র নির্গত হইয়াছে, অতএব শাস্ত্র-সমূহ অভ্রান্ত। আলাপ অথবা আলোচনার সময় পাশ্চাত্য বিজ্ঞানের নূতন সত্যের কথা অবতারণা করিলে, তাহার হাসি ঠাট্টা করিয়া উড়াইয়া দেয়। সম্প্রতি ভারতবর্ষের এই প্রদেশে-বিশেষতঃ কলিকাতা ও তাহার আশে পাশে—পণ্ডিতদের মধ্যে একটি মনোভাব পরিস্ফুট হইয়া উঠিতেছে ;