পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৭৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মশাররফ হোসেন ও বাংলা-সাহিত্য t? পবিত্র কোরাণশরিফে স্পষ্টভাবে বরাহ মাম উল্লেখে “ৰাইও মা" (হারাম} লিখা আছে। খাইলে প্রধান মরক ‘জাহান্নাম" তাঁহাতেই চিরবাস করিতে হইবে, জায় নিস্তায় নাই। খাষ্ট সম্বন্ধে বিধি আছে যে, খাওয়া যাইতে পারে, খাইতেই হইবে, গোমাংস না খাইলে মোসন্মানি থাকিবে না, মহাপাপী হুইয়া নম্বকযন্ত্রণাভোগ করিতে হইবে—এ কথা কোথাও লিখাদাই। থাইবার অনেক আছে। পোড়া খাইতে পারি-খাই না। ফড়িং ধরিয়া বৃতে ভাজিয়া টপটপ গিলিতে পারি—শাস্ত্রের কথা—গিলি না। গোসাপ উরসাং করিতে পারি—বিধি আছে, ভয়ে তাহার নিকটও যাই না। ছাগলের মধ্যে পাঠাও খাদ্য, সে পাঠার দিকে তত মেধি না; যে ছাগীতে দ্বন্ধ দেয়, তাহাকেই "আল্লাহ আক্বা" শুনাই । পাঠার সঙ্গে একেবারেই যে সম্বন্ধ নাই, তাহ বলিতে পারি না। রসন পরিতৃপ্ত আশায় তাহার বংশ বৃদ্ধির ক্ষমতা রহিত করিয়া দিয়া দিব্বি মোটাসোট চব্বিদার জিনিস বানাইয়। কোরমা কালিয়, কবাবে পেট পুরিয়া থাকি। উট এদেশে নাই, থাকিলেও তাহার কাছে যাওয়া যাইত না। কারণ, শরীরের গঠন দেখিয়াই পাকস্থলী ঠাণ্ড হয় । মহিষ খাদ্য, তাহার কাছে ছুরি হাতে করিয়া যায় কে ? কাজেই নিরীহ গো জাতির গলায় চুরি বসাইতে আর এদিক ওদিক্‌ চাছি না। এত খাদ্য থাকিতেও কি গোমাস না খাইলেই চলে না? ষোড়। মহিষ, বনগর, মেষ, ছাগল, মৃগ, খরগোল, সকলি ত চলিতে পারে? এ সকল থাইলেও ত ক্ষুধা নিবৃত্তি হয় ? এত থাকিতে গরুর মাসে জিহ্বার জল পড়ে কেন? ইহার উত্তর কে দিবে? গোদুগ্ধেই আমাদের জীবন। দশ মাস মায়ের উদরে বাস করিয়া জগতের মূখ দেখিতেই যেমন ক্ষুধায় কাতর হইয়া কাদিতে থাকি, সে সময়,-হায়ু! অমন কঠিন সময় কিলে আমাদের প্রাণ রক্ষা হয় ? মনে মনে একটা কথা উঠতেছে-মায়ের ত দুগ্ধ আছে ? আছে। কিন্তু গো-রস মায়ের উদয়ে না গেলে মায়ের স্তনে দুগ্ধ পাই কৈ ? মায়ের স্তনে দুগ্ধ থাকা সত্ত্বেও অনেকেই গো-রসে জীবন রক্ষা করিয়াছে। মিষ্টারে, পঙ্কন্নে সদ্যোজাত নবশিশুর প্রাণ রক্ষা হয় না, দুগ্ধই জীবের জীবন। জগতে দুগ্ধ ছাড়া এমন কোন একটি খাদ্য নির্দিষ্ট নাই যে, শুধু সেই খাদ্যটি খাইয় জীবন ধারণ করা যায়। গো-রাই বঙ্গের উপাদেয় খাদ্য। মুস্থ অসুস্থ শরীরে, এমন কি, প্রাণ সঞ্চার হইতে ৰিয়োগ পর্যন্ত দুগ্ধের প্রয়োজন। সেই দুগ্ধের মূল গোধনকে উদরসাং করিয়া ফেলিলে আর কি রক্ষা আছে ৷ ••• *