পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা পঞ্চম খণ্ড.pdf/২৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২ মানকুমারী বস্থ স্বর্গে গমন করেন। তাহার উদ্দেশে আমি একটি শোক-গাথা লিখিয়াছিলাম। তার পর অনেক দিন আর লেখাপড়া করিতে পারি নাই । পর-বৎসর [ ইং ১৮৮২ ] স্বামী মেডিকেল কলেজ হইতে এল. এম. এস. (L.M.S.) উপাধি প্রাপ্ত হন। কিন্তু আমার অদৃষ্টে এত মুখ ও সৌভাগ্য বেশী দিন সহিল না ! আমার শ্বশুরুঠাকুরের অনুরোধে এবং কয়েকটি সন্ত্রান্ত বন্ধু-বান্ধবের নিৰ্ব্বন্ধাতিশয়ে স্বামী সাতক্ষীরা মহকুমায় ডাক্তারি করিতে লাগিলেন । অল্প দিনের মধ্যেই সেখানে “সুদক্ষ চিকিৎসক” বলিয়া সাধারণের চিত্তাকর্ষক হইলেন । দু’জনেই মনে করিয়াছিলাম, এইবারে আমাদের সকল কষ্টের অবসান হইল । তিনি আমাকে বারংবার বলিয়াছিলেন, “এইবার আশ্বিন মাস হইতে তোমাকে, খুকীকে এবং আমার ছোট ভাই দু’টিকে আমার কাছে লইয়া যাইব ।” আমার এক ননন্দ পীড়িত হওয়াতে তিনি বাড়ী আসিয়াছিলেন। দুই তিন দিন মাত্র বাড়ীতে থাকিয়া ২৭শে বৈশাখ সাতক্ষীরায় চলিয়} গেলেন । আমরা উভয়েই আশ্বিন মাসের প্রতীক্ষা করিতেছিলাম । শ্রাবণ মাসে র্তাহার দারুণ পীড়াবু সংবাদ আসিল । আমার শ্বশুর, আমার অন্যতম ডাক্তার দেবর, আমার দাদা প্রভৃতি একান্ত উদ্বিগ্ন হইয়; সাতক্ষীরায় চলিয়া গেলেন । কেহ আমাকে লইয়া যাইবার কথ} বলিলেন না। আমি হিন্দু কুলবধু, লজ্জায় ভয়ে কিছুই বলিলাম না । কেবল র্তাহার আরোগ্য-সংবাদ পাইবার জন্য পথ চাহিয়া রহিলাম ; কেবল তাহার মঙ্গল-কামনায় ভগবানকে ডাকিলাম...তার পরে আর কি বলিব ? সংবাদ পাইলাম, যিনি আমার রমণী-জীবনের অবলম্বন, আমার সেই পরোপকারী, দয়ালু দেবপ্রতিম পতিরত্ন, তিনি ২৯শে শ্রাবণ সোমবারের রাত্রিতে আমাকে জগতের দুয়ারে হতভাগিনী করিয়া ভগবানের কাছে চলিয়া গিয়াছেন । ঠিক সেই মুহূৰ্ত্তে বিদ্যানন্দকাটীর