পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা পঞ্চম খণ্ড.pdf/২৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

X to বলেন্দ্রনাথ ঠাকুর কন্যার বিবাহ স্থির করিবার জন্ত র্তাহাদের বাড়ীতে যাইতে হইয়াছিল । যখন বাড়ীতে ফিরিলাম তখন রাত্রি হইয়। গিয়াছে । পথের মধ্যে হঠাৎ শুনিলাম যে, মুসলমান এবং ইংরাজদের ভিতর ভীষণ রকম মারামারি আরস্ত হইয়াছে । মুসলমানের ইংরাজ দেখিলেই তাহাকে অতি ভয়ানক রকমে মারিতেছে। রাজা যতীন্দ্রমোহন ঠাকুরের জমীর উপর একটা মসজিদ ছিল, সেই মসজিদটি ইংরাজের সাহায্যে তিনি ভাঙিয়া ফেলেন । তারই জন্ত ইহাদের আক্রোশ ! আগে জানিতাম না, রাস্তার মাঝে জাসিয়া এই ব্যাপার দেখিলাম—আমাদের ঘরের গাড়ী ছিল, আমারই এক ডাক্তার নন্দাইয়ের গাড়ীতে সে দিন গিয়াছিলাম । তাহার কোচম্যানকে প্রথমে কার গাড়ী জিজ্ঞাস করাতে সে অত বিবেচনা না করিয়া বলে যে সাহেবের । এই কথ। বলিবামাত্র অজস্র ধারায় ইট লাঠি সমানে গাড়ীর উপর পড়িতে লাগিল । গাড়ীর র্কাচ ভাঙিয়৷ চারি দিকে ছিটকাইয়া পড়িল । আমি বলুর মাথাট। আমার বুকের কাছে টানিয়া আনিয়া তাহকে বচাইবার চেষ্টা করিতে লাগিলাম । আমার পিঠের উপর অনেক ইট আসিয়া পড়িয়ছিল । আমাদের যখন এই অবস্থা, তখন কোচম্যান চীৎকার করিয়া বলিতে লাগিল, “এ গাড়ী বাঙ্গালীবাবুর—সাহেবের নয়।” তাহারা গাড়ীর নিকটে যখন আসিয়া দেখিল সত্য সত্যই ইহা বাঙ্গালীর গাড়ী তখন মিরস্ত হইল। আমরাও • কোন রকমে প্রাণটুকু হাতে লইয়া বাড়ী ফিরিলাম। বাড়ী আসিয়া তিন-চার দিন প্রায় অজ্ঞান অবস্থায় দুজনে পড়িয়া ছিলাম । সারা দেহে অসহ্য রকম বেদন এবং তার দরুণ যন্ত্রণায় আমার সৰ্ব্বশরীর নীলবর্ণ হইয়া গিয়াছিল । ডাক্তার আসিয়া ওষুধপত্তর ব্যবস্থা করিবার পর ক্রমশ: জারাম পাই । বলুর কপালের ভিতর একটি ছোট কাঠের টুকরা বিধিয়া অনেক দিন পর্য্যন্ত ছিল, তার পর আপন হইতেই সেট। বাহির হইয়া যায় ।