পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা পঞ্চম খণ্ড.pdf/৩০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বলেন্দ্রনাথ ও বাংলা-সাহিত্য >* বাংলা-সাহিত্যে এমন কবিত্বময় গদ্য আর ক্ষেষ্ঠ রচনা করিতে পারেন নাই, বস্তুত: প্রবন্ধ-সাহিত্যে বলেন্দ্রনাথ এক নূতন আদর্শ স্থাপন করিয়া গিয়াছেন । দুঃখের বিষয়, অকালমৃত্যুর জন্য বাংলা-সাহিত্যের বৃহত্তর ক্ষেত্রে আপন প্রতিভার স্পর্শ দিয়া তিনি চিরস্থায়ী ও সৰ্ব্বজনমান্য আসন দখল করিতে পারেন নাই ; যেটুকু তিনি দিয়া গিয়াছেন, তাহা হইতেই আমরা এক বিপুল সম্ভাবনার আকস্মিক বিনাশের জন্ত হাহাকার করিতে পারি । বলেন্দ্রনাথের মৃত্যুর অব্যবহিত পরেই তাহার সাহিত্য-প্রতিভা সম্বন্ধে মনীষী প্রিয়নাথ সেন আলোচনা করেন । এই আলোচনা রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়-সম্পাদিত “প্রদীপে’ (অশ্বিন-কাৰ্ত্তিক, ১৩০৬ ) প্রকাশিত হয় । আমরা উহা নিম্নে উদ্ধৃত করিতেছি :– “বলেন্দ্রনাথের মৃত্যুসংবাদে বঙ্গসাহিত্যানুরাগী মাত্রেই শোক-সন্তপ্ত হইয়াছেন। প্রথম হইতেই তাহার অপূৰ্ব্ব রচনাশক্তি বঙ্গীয় পাঠককে মুগ্ধ করিয়াছে। কি গদ্যে—কি পদ্যে র্তাহার একটি অভিনব মুন্দর মৌলিকতা দৃষ্ট হয় । তাঙ্গার প্রথম গদ্য-প্রবন্ধে—র্তাহার প্রথম কবিতা পুস্তকে বিকাশোন্মুখ প্রতিভার নবীন উন্মেষ পরিণত ভাষা ও ছনে প্রকাশিত ৷ ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় কিশোর প্রতিভা প্রায়ই পূৰ্ব্বতন আচাৰ্য্যদিগের পদামুসরণ করে । আমরা তাহার তরুণ কণ্ঠস্বরে পরিচিত পুরাতন স্বরভঙ্গী শুনিতে পাই--ভাষা-গঠনে পরিচিত শব্দবিদ্যাসপদ্ধতি দেখিতে পাই—এবং ছন্দ-রচনায় পূৰ্ব্বতন কবিদিগের শিল্পচাতুর্য অমুভব করি । বলেন্দ্রনাথের ইহা কম প্রশংসার কথা নয় যে প্রথম হইতেই র্তাহার রচনাপ্রণালী তাহার নিজের এ ২ তাহার অসাধারণ ক্ষমতার ইহা অপেক্ষ আর স্পষ্ট নিদর্শন কি থাকিতে পারে যে, যখন সমস্ত বঙ্গদেশ রবীন্দ্রনাথের বীণা ঝঙ্কারে কম্পিত উচ্ছলিত—যখন যে কোন আধুনিক কৰিত পড়িবে, তাহারই ভিতর অল্প বা অধিক পরিমাণে রবীন্দ্রনাথের