পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা পঞ্চম খণ্ড.pdf/৩৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সুরেশচন্দ্র সমাজপতি &ぬ হইতেছে, তিনি সেই শিক্ষা আকণ্ঠ পান করিয়াও অভিভূত হন নাই। তিনি নীলকণ্ঠের মত বর্তমান শিক্ষাপদ্ধতির মন্থন-সস্তৃত হলাহল স্বয়ং জীর্ণ করিয়া, তাহার অমৃতটুকু দেশবাসীকে দান করিয়া গিয়াছেন। বাল্য-জীবনের পারিবারিক দীক্ষা তাহাকে রক্ষণকবচের মত রক্ষা করিয়াছিল। ডিরোজিও-যুগের দেশহিতৈষণা, গণের কল্যাণকামনা, দেশহিত-ব্রতে অদম্য উৎসাহ রামেন্দ্রসুন্দরে পূর্ণভাবে বিকশিত হইলেও, সে যুগের কোনও অসংযম, কোনও উচ্ছ জ্বলতা তাহার জীবন ও চরিত্র দূরে থাক, তাহার চিন্তা বা র্তাহার কোনও সঙ্কল্পকেও স্পর্শ করিতে পারে নাই। আমার মনে হয়, এ ক্ষেত্রে তিনি ভাবী শিক্ষিত বাঙ্গালীর আদর্শ । ভবিষ্যতের বাঙ্গালী মধুকরের মত বিশ্ব-নন্দনের নানা ফুল হইতে মধু সঞ্চয় করিয়া মধুচক্র রচনা করিবে, কিন্তু সে চক্রে, সে মধুতে তাহার নিজত্ব থাকিবে । রামেন্দ্রসুন্দর স্বীয় জীবনে, চরিত্রে ও জীবনের কৰ্ম্ম-সমবায়ে সেই অন্যসাধারণ নিজত্বের পরিচয় ও প্রমাণ রাখিয়া গিয়াছেন। তিনি ভাবী বাঙ্গালীর অগ্রদূত। নিজত্বে প্রাচ্য ও প্রতীচ্যের সম্মিলন হইলে যাহা হয়, তাহাই রামেন্দ্রসুন্দর। জ্ঞানে ও বিজ্ঞানে, ধৰ্ম্মে ও সাহিত্যে গোড়ামী'র স্থান নাই, কিন্তু নিজত্বের যথেষ্ট অবকাশ আছে, রামেন্দ্রসুন্দর নিজের জীবনে বাঙ্গালীর উত্তর-পুরুষের জষ্ঠ এই ইঙ্গিত রাখিয়া গিয়াছেন। রামেন্দ্র বাঙ্গালার সাহিত্যেই আপনাকে প্রতিষ্ঠিত করিয়াছিলেন । তিনি পচিশ বৎসর রিপণ কলেজে অধ্যাপকতা ও অধ্যক্ষতা করিয়া শিক্ষাবিভাগে যশস্বী হইয়াছিলেন । কিন্তু তাছার পরিচয়, প্রতিষ্ঠা বাঙ্গাল সাহিত্যে। সংক্ষেপে রামেন্দ্রসুন্দরের সাহিত্য-জীবনের পূর্ণ পরিচয়দান সম্ভব নহে। সৰ্ব্বতোমুখী প্রতিভার অধিকারী রামেন্দ্রসুন্দর বিজ্ঞানে, দর্শনে, সাহিত্যে অসাধারণ কৃতিত্বের পরিচয় রাখিয়া