পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (পঞ্চম ভাগ).pdf/২৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

! সাহিত্য-পরিষৎ-পত্ৰিক । [ 8 í RA *سواجه ভাষাকেও সাধারণের বোধগম্য করিতে হইবে । উৎকট পারিভাষিক-শব্দ-ভীষণ ভাষা পণ্ডিতদের জন্য । সাধারণকে বিজ্ঞান শিখাইতে স্কুইলে পারিভাষিকত্ব যথাসাধ্য বর্জন করিয়া, ভাষাকেও সুশ্রাব্য ও মোলায়েম না করিলে চলিবে না। তথাপি বিজ্ঞান যখন বিজ্ঞান উহার পারিভাষিকত্ব কতকটা থাকিবেই। সেই পারিভাষিকত্ব যদি আবার শ্রুতিকঠোর দুরুচ্চাৰ্য বৈদেশিক ভাষার আশ্ৰয় করিয়া থাকে, তবে সাধারণের পক্ষে বিজ্ঞানশিক্ষার কোন আশাই থাকিবে না। প্রায় আশী বৎসর হইল, বাঙ্গালা ভাষায় প্রথম রসায়ন গ্ৰন্থ প্রকাশিত হইয়াছে; কিন্তু আজিও বাঙ্গালীব নিকট রসায়নশাস্ত্র একবারে অপরিচিত ; তাহার অন্যতম প্রধান কারণ এই যে, ৫য় ভাষায় রসায়নের গ্ৰন্থ লিখিত হয়, তাহ বাঙ্গালীর ভাষা নহে ; কোনকালে তাহা বাঙ্গালীর ভাষা হইবে না। র্যাহারা আশা করিয়া নিশ্চিন্ত আছেন যে, বাঙ্গালী জনসাধারণ এককালে ইংরাজিতে পণ্ডিত হইয়া উঠিবে, তখন আর বাঙ্গালা ভাষায় কোন বৈজ্ঞানিক সাহিত্য প্ৰণয়নের আবশ্যতা থাকিবে না, তঁহাদের কথা স্বতন্ত্র। আমার সে আশা নাই। বাঙ্গালার জনসাধারণ মাতৃভাষা ত্যাগ করিয়া ইংরাজী ধরুক, সে আকাজক্ষাও আমার নাই। বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ইংরাজির স্থান বাঙ্গালা গ্ৰহণ করিবে, বাঙ্গালী বৈদেশিক ভাষার সাহায্যে শাস্ত্ৰাধ্যয়নে ঘৃণা বোধ করিবে, আমি সেই দিনের আশা করি ও আকাঙ্ক্ষা রাখি। এই হতভাগ্য দেশে সে শুভদিন শীঘ্ৰ আসিবে না, হয়ত কখনই আসিবে না ; কিন্তু বাঙ্গালীর চেষ্টার অভাবে বা উৎসাহের অভাবে যদি সেদিন না আসে, তবে বাঙ্গালীর ন্যায় অধম জীব সংসার হইতে লুপ্ত হউক । যোগেশ বাবু তাঁহার গ্রন্থের ভূমিকায় লিখিয়াছেন, “যিনি কেবল সংস্কৃত ভাষাকেই বাঙ্গালা ভাষা করিতে ব্যাপন, তিনি অজ্ঞাতসারে বাঙ্গালা ভাষাকে মৃতভাষায় পরিণত করিতে ইচ্ছা করেন।” যেখানে সংস্কৃতমূলক শব্দ পাওয়া গেল না, সেখানে স্লেচ্ছভাষায় শব্দ গ্ৰহণ করা; আপত্তি নাই। কিন্তু যদি একটু চেষ্টা করিলে সংস্কৃতমূলক শব্দ পাওয়া যায়, তাহা না করিয়া একবারে স্নোিচ্ছ। ভাষার আশ্ৰয় লইলেই জীবনী শক্তিটা একবারে বাড়িয়া উঠিবে কিরূপে, বুঝি না। উলঙ্গ হইয়া থাকা অপেক্ষা হাট কোটি পরা ভাল ; কিন্তু ধুতি চাদর বর্তমান থাকিতে যে হাট কোট পরে, তাহার মনুষ্যত্বটা অনেকটা কপিত্বের কাছাকাছি। এই সোজা কথা।” আমাদের মনে রাখা উচিত। পুনশ্চ যোগেশ বাবু বলেন, “অক্সিজেন, হাইড্রোজেন প্ৰভৃতি নামগুলিকে কি কারণে আমজান, উদজান প্ৰভৃতি নাম পরিবৰ্ত্তিত করিতে হইবে, তাহা আমার সামান্য বুদ্ধিতে উপলব্ধ হইতেছে না।” পরিবর্তনের যথেষ্ট কারণ আছে। প্রাচীন হিন্দুগণ । &lक*g*३ নিকট রাশিচক্রের বিষয় লিখিয়াছিলেন । দ্বাদশ রাশির নামের জন্য ক্রিয়, তাবুরি প্রভৃতি একসেট যাবনিক শব্দ গৃহীত হইয়াছিল; কিন্তু সে নামগুলি চলে নাই ; মেষ, বৃষ প্ৰভৃতি সংস্কৃতমূলক নামই চলিয়া গিয়াছে। প্রত্যেক ভাষারই একটা বৈশিষ্ট্য আছে, ইংরাজিতে যাহাকে বলে genius, কোন শব্দ সেই বৈশিষ্ট্যসঙ্গত না হইলে ভাষার মধ্যে মিশে না ও স্থান পায় না। এই সঙ্গতির অন্য ইংরাজের সিপাহী শব্দকে “সেপাই’ করিয়া লইয়া