পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (পঞ্চম ভাগ).pdf/৩৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ५० ] নাই। চরকেও ৩২ তত্ত্বের কথা আছে। অতএব বুঝা যাইতেছে যে এই দুই প্রাচীনতম আয়ু ৰ্বেদীয় গ্রন্থে যখন ন্যায়ের পদার্থ তত্ত্বের অনুসরণ দেখা যায় না, তখন ন্যায়কে আমরা বেশী প্রাচীন বলিতে পারি না, অন্ততঃ আয়ুৰ্বেদীয় শাস্ত্রের সাহায্যে তাহা বলা যাইতে পারে না। পণ্ডিত শ্ৰীজয়চন্দ্ৰ नेिक्षांख्छ्ष१ বলিলেন, নগেন্দ্ৰ বাবু প্ৰাচীন নৈয়ায়িকগণের কালনিৰ্ণয় করিবার জন্য যেরূপ পরিশ্রম করিয়া যে সকল সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছেন, তাহার জন্য আমরা সহস্ৰ সাধুবাদ দিতেছি এবং চির আশীৰ্ব্বাদর্ক আমরা অন্তরের সহিত আশীৰ্ব্বাদ করিতেছি। ” তিনি এ প্রসঙ্গে যে সকল কথার অবতারণা করিয়াছেন, তাহা আমরা কখন শুনি নাই, স্বপ্নেও ভাবি নাই। প্ৰাচীন ন্যায় বিস্তার সম্বন্ধে নগেন্দ্র বাবু যাহা বলিয়াছেন অর্থাৎ অমুক দর্শনের পর অমুক দর্শনের উৎপত্তি, ঐরূপ পৌৰ্ব্বাপৰ্য্য যেন দৰ্শনশাস্ত্রের ঠিক ভিত্তি নহে। মহর্ষির লোকহিতার্থ যাবদীয় দর্শন রচনা করিয়া গিয়াছেন। ন্যায়ের লক্ষ্য পদার্থতত্ত্ব নিরূপণ করিয়া আত্মতত্ত্ব লাভের পর শ্ৰেয় লাভ। পদার্থ অনন্ত তাহাকে বুদ্ধিগম্য করিবার জন্য সাংখ্যে প্রধানতঃ ২৪টি পদার্থে বিভক্ত করিলেন, ক্রমে তাহাকে কমাইয়া গৌতম ১৬টি করিলেন, কণাদ তাহাও কমাইয়া ৬টি করিলেন, শেষে বেদব্যাস একমাত্ৰ সৎপদার্থের স্বীকার করিয়া সমস্ত মীমাংসা করিলেন। পদার্থতত্ত্ব নিরূপিত হইলে আমি কি নির্ণীত হইবে, এই আমি নির্ণয় শাস্ত্রাবতারের লক্ষ্য ছিল। নব্য ন্যায়ের উৎপত্তির মূলে যেমন জিগীষা বা বাদী নিরস্ত করিাবার ভাব বর্তমান দেখু যায, বৌদ্ধ ও জৈন এবং তৎসাময়িক হিন্দু ন্যায়ের যাবদীয় গ্রন্থের উৎপত্তি ও বিস্তার হইয়াছিল বলিয়া বোধ হয় এবং নগেন্দ্ৰ বাবুর উল্লিখিত গ্রন্থগুলির নামমালা শুনিলেই তাহা কতকটা বুঝা যায়। এরূপ বাদী নিরসন চেষ্টা বা জিগীষা প্ৰবল হওয়াতে ন্যায়শাস্ত্রের মূল লক্ষ্য প্রাচীন বৌদ্ধাদিযুগের গ্ৰন্থ এবং নব্য ন্যায়ের গ্রন্থের অধিকাংশে বহুদূরে চলিয়াছে। বাদী নিরসনের চেষ্টায় পদার্থনির্ণয়ের চেষ্টা অন্তৰ্হিত হইয়াছে। আজকাল ইংরাজী পদার্থবিদ্যা ও রাসায়নিক তত্ত্ব দ্বারা যে সকল পদার্থ নির্ণয় হইয়া থাকে, পূর্বে তাহা দর্শন শাস্ত্রের আলোচনা দ্বারাই হইত। তবে সে নিয়মে এখন আর উহার পঠন পাঠন হয় না । ইহার পর বক্তা সংক্ষেপে ন্যায়ের পদার্থতিত্ত্বের বিচারের অবতারণা করাতে সভা তাহাকে সে সম্বন্ধে স্বতন্ত্র প্রবন্ধ লিখিতে অনুরোধ করিলেন । মহামহোপাধ্যায় শ্ৰীমুক্ত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয় বলিলেন, নগেন্দ্র বাবু যেরূপ। চীন হইতে । পেরু পর্যন্ত ঘূরিয়া তাঁহার প্রবন্ধে প্ৰমাণাদি সংগ্ৰহ করিয়াছেন, তাহার সমালোচনা এরূপ ভাবে শুনিয়াই তৎক্ষণাৎ করা যায় না। দর্শনের পৌৰ্ব্বাপৰ্য্য স্থিা করা বড় কঠিন। এখন ষড় দর্শন বলিলৈ আমরা যে ছয় দর্শন বুঝি, প্ৰাচীনকালে ষড়দর্শন বলিলে তাহা বুঝাইত না। এখনু সংখ্য, ন্যায়, বৈশেষিক, যোগ ও পুৰ্বোত্তর মীমাংসা বুঝায়, আর সেকালে লৌকায়তিক, বৌদ্ধ, জৈন, শৈব, সাংখ্য ও মীমাংসা এই ছয়টি বুঝাইত, বিবেকবিলাস নামক গ্রন্থে ইহার প্ৰসঙ্গ আছে। 7 বৌদ্ধ জন্মের পূর্বে ছয়টি দার্শনিক সম্প্রদায় ছিল, তাহদের একটি দলের নাম আজীবক, কেহ কেহ বলেন শেষে ইহারাই ভাগবত নামে পরিচিত হয়, আর এক দলের