পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (অষ্টম ভাগ ১-৪ পর্ব).pdf/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 loyo সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা । ন্যায় তাহারা বাগাড়ম্বর করে নাই, নীরবে ৮১০ হাজার টাকা চাদ করিয়া মৃত অধ্যাপকের কোন স্মরণ চিহ্ন রাখিবার ব্যবস্থা করিয়া, মৃত অধ্যাপকের প্রতি প্ৰকৃত ভক্তি দেখাইয়াছে। আমাদের তাহা হইবে না, আমাদের ভাবে যতটা হয়। আমরা তঁহার নিকট বিশেষরূপ ঋণী। আছি। তিনি আমাদের বিশেষ উপকার করিয়া গিয়াছেন। বৈদিক সময় হইতে প্ৰবাহিত যে চিন্তা স্রোত, তাহ বেদান্ত পৰ্যন্ত পরিব্যাপ্ত। এই চিন্তায় হিন্দু অস্থিরের অন্তরে স্থিরকে দেখে, অনিত্যের অন্তরে নিত্যকে দেখে। হিন্দুর এই আদ্ধান্ত (রাদ্ধান্ত ?), এই সমীক্ষণ (Thought) যে আছে, ম্যাকসমূলারই তাহ প্ৰকাশ করেন। ইওরোপীয়েরা বলেন, মানুষের ঈশজ্ঞান প্ৰথমে কাষ্ঠ-প্ৰস্তর-পুত্তলিকাদির পূজা, পরে পিতৃপুরুষ-ভূতপ্ৰেতাদির পূজা ইত্যাদি হইতে ক্ৰমশঃ উন্মেষিত হয়। ম্যাকাসমূলার বেদ হইতে প্ৰমাণ দেখাইয়া বলেন, নিত্য বস্তুতে বিশ্বাস হিন্দুদের গোড়া হইতে আছে। তিনি ইউরোপে বুঝাইয়াছিলেন, হিন্দুর বেদ গ্রীকের Myth নহে, হিন্দুর যে সমীক্ষণ আছে, বেদে তাহার প্রমাণ পাওয়া যায়। যিনি আমাদের বেদকে এতটা উচ্চ করিয়া গিয়াছেন। যিনি বিদেশী হইয়া পাশ্চাত্য দেশে হিন্দুর জ্ঞানের মহিমা কীৰ্ত্তন করিয়া গিয়াছেন ; আজ র্তাহার বিয়োগে আমরা শোকপ্ৰকাশ করিতে সমবেত হইয়াছি। ম্যাকাসমূলার বেদের আলোচনায় আর একটি দেখাইয়াছেন, বেদ পড়িয়া বোধ হয়, হিন্দুরা অগ্নি বলিয়া অগ্নিকে পূজা করিত না, অগ্নি বলিয়া তন্মধ্যস্থ হিরন্ময় পুরুষের পূজা করিত। বেদে দৃশ্যমান তদ্বস্তুর পূজা নাই। অগ্নির অন্তরে তাহার কৰ্ত্তা (agent) আছে, হিন্দুর ঋষির श्न्लूिल। অগ্নি বলিতে সেই কৰ্ত্তাকে দেখিতেন । আমরা যতই দার্শনিক হই না কেন, ইহার অপেক্ষা অধিক জ্ঞান আমাদের নাই। বেদের অনেক দেব-বাদের মধ্যে যে একত্ব আছে, ম্যাকসমুলারই তাহ পাশ্চাত্য জগতে বুঝাইয়া দেন। অগ্নি, যম, মাতিরিশ্বা প্রামাণ্য হিসাবে এক, সকলেরই কৰ্ত্তা (agent) এক। কর্তৃত্ব অনেক রকম হয়, কিন্তু কৰ্ত্তা এক। আমাদের এই চিন্তা-স্রোত-এই সমীক্ষণ যত দিন ছিল, ততদিন আমরা উচ্চে ছিলাম, আমরা হিন্দু ছিলাম। ইহা হারাইয়াই আমরা পতিত হইয়াছি, হ্যাট কোট বা তাহার দোষে আমাদের যে পাতিত্য ঘটিয়াছে, সে পাতিত্য পাতিত্য নহে, এই চিন্তা হারাইয়া আগেই আমরা প্ৰকৃত প্ৰস্তাবে পতিত হইয়াছি। বৈদিক কালের এই জ্ঞান হইতে কালে হিন্দুর বেদান্ত জ্ঞান হইয়াছিল। উপাধ্যায় ব্ৰহ্মবান্ধব এইরূপে নানা দার্শনিক তত্ত্বের আলোচনা করিয়া দেখাইলেন যে, এই সকল কথা ম্যাকাসমূলারই সর্বপ্রথম ইউরোপে প্রচার করিয়া আমাদিগের কৃতজ্ঞতার, শ্ৰদ্ধার, ভক্তির একজন প্রধান পাত্ৰ হইয়া গিয়াছেন। তিনি আরও বলিলেন, ম্যাকসমুলার যে ভাবে হিন্দুর ধৰ্ম্ম ও জ্ঞানের আলোচনা করিয়াছেন, আমরা সেই ভাবে যদি সেই পন্থানুসরণ করিয়া যাই, তাহা হইলেও আমরা উন্নতি করিতে পারিব। তৎপরে শ্ৰীযুক্ত রামেন্দ্রসুন্দর ত্ৰিবেদী, এম এ এসম্বন্ধে তাহার লিখিত একটা প্ৰবন্ধ পাঠ করিয়া প্রধানতঃ দেখাইলেন যে, ম্যাকসমুলারই ভাষাতত্ত্বালোচনা দ্বার। আমাদিগকে আৰ্য্য