পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (অষ্টম ভাগ ১-৪ পর্ব).pdf/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গীয় সাহিত্যপরিষদের মাসিক কাৰ্যবিবরণ । 8|/ه করিয়াছেন, তৎপূর্বে ইউরোপীয়েরাই একমাত্ৰ আৰ্য্যত্বের দাবী করিতেন। ম্যাক্সমুলারই আমাদিগকেও সেই দাবীর অংশী করিয়া দিয়া গিয়াছেন। এতদ্ভিন্ন তঁহার ঋশ্বেদ-প্রচার, বৈদিক-তত্ত্বালোচনা এবং ভারতের অতীত ইতিহাস অনুসন্ধানাদির জন্য আমরা তাহার নিকট বিশেষ ঋণী। তৎপরে শ্ৰীযুক্ত হীরেন্দ্রনাথ দত্ত, এম এ, বি এল মহাশয় বলিলেন, ১৩০১ সালে পরিষদের যখন প্রথম বিশিষ্ট সভ্য নির্বাচন করা হয়, তখন ইংলণ্ডীয় অন্যান্য পণ্ডিতগণের ন্যায় আমরা ম্যাক্সমুলারকেও আমাদের বিশিষ্ট সভ্য হইবার জন্য আহবান করিয়াছিলাম। তিনি সেই উপলক্ষে আমাদিগকে কয়েকটী উপদেশ দেন, তন্মধ্যে একটি এই,-বাঙ্গালা দেশের গ্ৰাম-নগরাদির নামের তালিকা সংগ্রহ এবং তাঁহাদের তত্তৎনামের তথ্য নিরূপণ, করা আমাদের কৰ্ত্তব্য। সে কাৰ্য্য সম্পাদন করা বড় গুরুতর ব্যাপার, আমরা সে কাৰ্য্যে আজিও হস্তক্ষেপ করিতে পারি নাই। র্তাহার আর একটি উপদেশ বাঙ্গালা শব্দের বুৎপত্তি নিম্পাদন, তাহদের প্রাচীনতম রূপ নিৰ্দ্ধারণ ইত্যাদি। এই কাৰ্য্যে হস্তক্ষেপ করিতে হইলে, আমাদের প্রাচীন বাঙ্গালা সাহিত্যের উদ্ধার আবশ্যক বলিয়া স্থির হয়, কারণ আমরা রামায়ণের শব্দ-সংগ্ৰহ করিতে গিয়া, তাহ বিশেষরূপে বুঝিতে পারিয়াছিলাম। আজ আমরা যে প্রাচীন-বাঙ্গালা-সাহিত্য-উদ্ধারে রত হইয়াছি, ইহাও তাঁহারই প্রেরণায় বলিতে হইবে। তঁহার এই চিঠির পর আর তাহার সহিত আমাদের কোন সম্বন্ধ ছিল না, কিন্তু তিনি পরিষৎকে ভুলেন নাই। র্তাহার ৬০ বৎসর বয়সের সময়ে তাহার বন্ধু-বান্ধবের একটা উৎসব করেন। তদুপলক্ষে তাহার এক বৎসর বয়সের ছবি হইতে ১৬ বৎসর বয়সের ছবি একখানি কাগজে উঠাইয়া বন্ধুবৰ্গকে বিতরণ করা হয়। ম্যাক্সমুলার পরিষৎকে এই ছবি একখানি পাঠাইয়া দিয়া ইহার প্রতি আপন প্রতিপ্ৰকাশ করিয়াছিলেন। দুৰ্ভাগ্যক্রমে আমরা সে ছবি হারাইয়াছি। যে বাঙ্গালী ভাষার পরিপুষ্টি ও উন্নতির জন্য পরিষৎ এত যত্ন করিতেছেন, পরিষৎ শুনিয়া সন্তুষ্ট হইবেন, ম্যাক্সমুলার প্রথমে সেই বাঙ্গালা ভাষাসম্বন্ধেই প্ৰবন্ধ লিখিয়াছিলেন। তাহার সেই প্ৰবন্ধের নাম ‘ The Relation of the Bengali Language to other Aryan Languages.”ff C1 2.5iS (Sri তিনি আপনাকে ভট্ট ম্যাক্সমুলার বলিয়া পরিচয় দিতে ভালবাসিতেন। এই অনুরাগের উৎপত্তিও আবার কৌতুকাবহ । ৬৭ বৎসর বয়সে তিনি যখন জৰ্ম্মান পাঠশালায় পড়িতেন, তখন একখানি কাপি বহির মলাটে কাশীর ছবি দেখেন। কাশীর গঙ্গার ধারের শোভা বড় সুন্দর। এই ছবি দেখিয়া, তঁহার মনে হইত, আমি যেন কাশীতে গিয়াছি, গঙ্গাতীরে বেড়াইতেছি। এই দিবাস্বপ্ন হইতে র্তাহার ভারতানুরাগের সৃষ্টি । এত অনুরাগ সত্ত্বেও তঁহার ভারতাগমন ঘটে নাই। সে ভালই হইয়াছে ; তিনি সূক্ষ্মীদেহে কল্পনায় ভারতভ্রমণে যে আনন্দ পাইতেন, স্বশরীরে আসিলে তাহ পাইতেন না। ইংরাজের প্রথমে ভারত-সম্বন্ধে বড় অবজ্ঞা প্ৰকাশ করিতেন, আমাদিগকে Gentoo বলিয়া সম্বোধন করিতেন । Jones. Collebrooke প্ৰভাতি