পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (অষ্টম ভাগ ১-৪ পর্ব).pdf/২০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

889 সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা । | ७म ज९थJ । ঘোড়া ; মস্তক, মাথা ; পিষ্টক, পিঠা ; কণ্টক, কঁটা ; চিপিটক, চিড়া ; গোপালক, গোয়ালা ; কুল্যক, কুলা । বাঙলায় অনেক শব্দ আছে যাহা কখনো বা স্বার্থে আ প্ৰত্যয় গ্ৰহণ করিয়াছে, কখনো করে নাই। যেমন তক্ত, তক্তা ; বাঘ বাঘা ; পাট, পাট ; ল্যাজ, ল্যাজা ; চোঙ, চোঙা ; চাদ, চাদ ; পাত, পাতা ; ভাই, ভাইয়া ( ভায়া ) ; বাপ, বাপা ; থাল, থালা ; কালো, কালা ; তল, তলা ; ছাগল, ছাগল ; বাদল, বাদলা ; পাগল, পাগলা ; বামন, বামনা ; বেল (ফুল), বেলা ; ইলিষ, ইলষা ( ইলাষে )। এই অ্যা প্ৰত্যয়যোগে অনেকস্থলে অবজ্ঞা বা অতিপরিচয় জ্ঞাপন করে । বিশেষতঃ মানুষের নামসম্বন্ধে। যথা, রাম, রামা ; শাম, শামা ; হরি, হরে ( হরিয়া ) ; মধু, মোধো (মধুয়া ) ; ফটিক, ফটকে (ফট কিয়া ) । 曹 দ্রষ্টব্য এই যে, সকল নামে আ প্ৰত্যয় হয় না ; যাদবকে যাদবা, মাধবকে মাধব বলেন । শ্ৰীশ, প্রিয়, পরাণ প্ৰভৃতিও এইরূপ। বাঙলা নামের বিকার সম্বন্ধে কোন পাঠক আলোচনা সম্পূর্ণ করিয়া দিলে আনন্দিত হইব। স্বার্থে আ প্ৰত্যয়ের উদাহরণ দেওয়া গেছে, তাহাতে অর্থের পরিবর্তন হয় না। আবার, আ প্ৰত্যয়ে অর্থের কিছু পরিবর্তন ঘটে, এমন উদাহরণও আছে। যেমন, হাত হইতে হাত ( রন্ধনের হাতা, জামার হাতা, অর্থাৎ হাতের মত পদার্থ) ; ঠ্যাঙ হইতে ঠ্যাঙ ( ঠ্যাঙের ন্যায় পদার্থ) ; ভাত হইতে ভাতা ( খোরাকী ) ; বাস হইতে বাসা ; ধোব হইতে ধোবা ; চাষ হইতে চাষ । ধাতুর উত্তর আ প্ৰত্যয়যোগে ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য বিশেষণের সৃষ্টি হয়। বাঁধ ধাতুর উত্তর আ প্ৰত্যয় করিয়া বাধা ; ঝর ধাতুর উত্তর আ প্ৰত্যয় করিয়া ঝরা । ইহারা বিশেষ্য বিশেষণ উভয় ভাবেই ব্যবহৃত হয়। বিশেষণ, যেমন বাধা হাত ; বিশেষ্য, যেমন হাত-বাধা । দ্রষ্টব্য এই যে, কেবল একমাত্রিক অর্থাৎ monosyllabic ধাতুর উত্তর এইরূপ আ প্ৰত্যয় হইয়া দুই অক্ষরের বিশেষ্য বিশেষণ সৃষ্টি করে। যেমন, ধরমার চল বল হইতে ধরা মারা চলা বলা । বহুমাত্রিক ধাতু বা ক্রিয়াবাচক শব্দের উত্তর আ সংযোগ হয় না। যেমন আঁচড় হইতে আঁচড়া, আছাড় হইতে আছড়া হয় না । কিন্তু শুদ্ধমাত্র বিশেষণরূপে হইতে পারে। যেমন থ্যাৎলা মাংস, কেঁকুড়া চুল। বাগআঁচড়া গাছ, নেই-আঁকড়া লোক, ( ন্যায়-আঁকুড়া অর্থাৎ নৈয়ায়িক তার্কিক)। ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য বিশেষণের দৃষ্টান্ত উপরে দেওয়া গেল। আ প্ৰত্যয়যোগে নিম্পন্ন পদার্থবাচক ও গুণবাচক বিশেষের দৃষ্টান্ত দুই একটি মনে পড়িতেছে ;-তাওয়া ( যাহাতে রুটিতে তা দেওয়া যায় ) ; দাওয়া ( দাবী, অর্থাৎ দাও বলিবার অধিকার ) ; আছড়া (আঁট হইতে ধান আছড়াইয়া লইয়া যাহা অবশিষ্ট থাকে)। বিশিষ্ট অর্থে আ প্ৰত্যয় হইয়া থাকে। যথা, তেলবিশিষ্ট তেল ; বেতালবিশিষ্ট