পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (অষ্টম ভাগ ১-৪ পর্ব).pdf/২৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Mae Sooty বাঙ্গলা ব্যাকরণ । SqʻA মানুষ্যের ভাষা ব্যবচ্ছেদ ও বিশ্লেষণ করিলেই দেখা যাইবে, ভাষার গঠনপ্রণালীতে কতকগুলি নিয়ম আছে। শব্দের গঠনে, পদের গঠনে ও বাক্যের গঠনে এইরূপ নিয়মের আবিষ্কারই ব্যাকরণের ( অর্থাৎ গ্রামারের ) উদ্দেশ্য। এইরূপ নিয়ম যে ভাষামাত্রেই বর্তমান, তাহ কেহ অস্বীকার করিবেন না ; কেননা কোন নিয়ম না থাকার নাম বিশৃঙ্খলা ; এবং যে ভাষা সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খল, কোন নিয়মই যাহা মানে না, তাহা মনুষ্যের ব্যবহাৰ্য্য নহে। অতি অসভ্য জাতির ভাষাকেও বিশ্লেষণ করিলে সেই ভাষার অবস্থানুরূপ নিয়মের আবিষ্কার করা যাইতে পারে । অসভ্য জাতির ভাষারও ব্যাকরণ তৈয়ার হইতে পারে। যে ভাষায় নিয়ম আদৌ নাই, সে ভাষা কেহ শিখিতে পারে না, কাহাকেও শিখান যায় না ; তাহা ভাষাই নহে। এবং নিয়ম থাকিলেই সেই নিয়মের আবিস্কার যিনি করিবেন, তিনিই সেই ভাষার বৈয়াকরণিক । ব্যাকরণ শাস্ত্ৰ প্ৰকৃত পক্ষে একটি বিজ্ঞান শাস্ত্র ; ব্যাপক অর্থে ইতাকে ভাষাবিজ্ঞান বলা যাইতে পারে। এই ভাষাবিজ্ঞানের এক অংশ, বোধ করি সর্বপ্ৰধান অংশ, যাহা Etymology অর্থাৎ প্ৰকৃত ব্যাকরণ, তাহা আমাদের ভারতবর্ষে অতি প্ৰাচীনকালে পরা কাঠা প্ৰাপ্ত হইয়াছিল । মহর্ষি পাণিনির হস্তে ইহার চরম উৎকর্ষ সাধিত হয়। তিনিই জগতের মধ্যে অদ্বিতীয় বৈয়াকরণিক, তাহার তুল্য। আর কেহ জন্মায় নাই। মেকলের ভাষায় বলা যাইতে পারে এক লিপস্ সকলের অগ্রণী ; অন্যের স্থান বহুদূরে। পাণিনির বহু পূৰ্ব্ব হইতে ঋষিগণ ব্যাকরণ শাস্ত্রের আলোচনা করিয়া সংস্কৃত ভাষাবিজ্ঞান গঠিত করিতেছিলেন , পাণিনি সেই বিজ্ঞানকে প্ৰায় সৰ্ব্বাঙ্গীণ সম্পূর্ণতা দান করেন। তার পর যাহা কিছু হইয়াছে, তাহা তাঁহারই বাৰ্ত্তিক ও ভাষ্য ও টীকা। আধুনিক বৈয়াকরণেরা যাহা কিছু লিখিয়াছেন, তাহা সেই প্ৰাচীনকালের বিজ্ঞানের বালক পাঠ্য পুস্তক ☆|で面| পাণিনি প্ৰভৃতি মহৰ্ষিরা ভাষা ব্যবচ্ছেদ করিয়া যে সকল নিয়মের অস্তিত্ব আবিষ্কার করিয়া গিয়াছেন, তাহাই সংস্কৃত ভাষার পক্ষে প্রকৃত ভাষাবিজ্ঞান ; তাহাই প্ৰকৃত ব্যাকরণ । আমরা বালকগণকে ও অনভিজ্ঞকে ভাষা শিখাইবার জন্য যে সকল ব্যাকরণঘটিত পুস্তক লিখি, তাহা বৈজ্ঞানিক পুস্তক বটে, কিন্তু তাহা বিজ্ঞান শাস্ত্ৰ নহে। আর একটা কথা বলা আবশ্যক। অনেকের বিশ্বাস ব্যাকরণকারেরা যে নিয়ম বাধেন, ভাষা সেই নিয়মে চলে। মিথ্যা কথা । কোনও ব্যারাকণকারের সাধ্য নাই যে কোন নিয়ম বঁধেন, কোন আইন জারি করেন । ভাষার নিয়ম ব্যাকরণকারের বৃদ্ধপিতামহগণের জন্মের বহুপূৰ্ব্ব হইতে বৰ্ত্তমান থাকে ; তিনি সেই গুলি আবিষ্কার করিয়া অন্তকে দেখাইয়া দেন মাত্র । নিয়ম বঁাধার কথা উঠিতেই পারে না । বৰ্ত্তমান কালে বাঙ্গলা ব্যাকরণ নামে যে কয়েকখানি শিশুবোধক পুস্তক প্ৰচলিত আছে, উহ! প্ৰকৃত বাঙ্গলা ব্যাকরণ নহে। নহে, কেন না বাঙ্গালা ব্যাকরণই এখন নিৰ্ম্মিত হয় নাই, ACY