পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (অষ্টম ভাগ ১-৪ পর্ব).pdf/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

RV O সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা । বলিলেন, অর্থ লইয়াই ব্যবস্থা। এজন্য আমরা যেরূপ সাহায্য পাইব, সেইরূপ ব্যবস্থা করিব। সকলেই রজনী বাবুর স্মৃতিচিহের জন্য কিছু না কিছু দিবেন। - অতঃপর চণ্ডী বাবু বলিলেন, ছবি না হইয়া অন্যবিধ স্মৃতি চিহ্ন রাখাই হউক। আমার মতে চিত্ৰ উপযুক্ত নহে। শ্ৰীযুক্ত কুঞ্জলাল রায় বলিলেন, এ বিষয় কাৰ্য্য-নিৰ্বাহক-সমিতির উপর ভার দেওয়া হউক, তাহারা অর্থ বুঝিয়া ব্যবস্থা করিবেন। সভাপতি মহাশয় ইহার সমর্থন করিয়া বলিলেন, আগ্ৰহ থাকিতে থাকিতে কাৰ্য্যনিৰ্বাহক-সমিতি এ বিষয়ে কাৰ্য্যারম্ভ করুন। তৎপরে সভাপতি মহাশয় উপসংহারে বলিলেন,-আজি আমরা যে জন্য সমবেত, উপস্থিত লোকসংখ্যা দেখিয়া এবং উপস্থিত ব্যক্তিগণের মনোভাব বুঝিয়া আমি সন্তোষ লাভ করিলাম। রজনীবাবুর জন্য শোক-সভায় আমি যে আজ উপস্থিত হইতে পারিয়াছি, ইহাতে আমি আপনাকে ধন্য বোধ করিতেছি। সাধু ও সৎ ব্যক্তির জন্য শোক যেমন সর্বত্ৰ ছড়াইয়া পড়ে, রজনীকান্তের জন্য ও যে তাহা হহয়ছে, ইহাই আমাদের গৌরবের কথা । বাঙ্গালা ভাষার সেবায় রজনীকান্তের জীবনে আমরা বিদ্যাবত্তার, সাহিত্য-চৰ্চার অপূর্ব ফল দেখিতে পাইয়াছি। ইতিহাস বিষয়ে তিনি যেরূপ পরিশ্রম করিয়াছেন এবং যেরূপ কৃতিত্ব লাভ করিয়া গিয়াছেন, তাহ বড় অল্প কথা নহে। Gibbon, Macaulay প্রভৃতির গ্ৰন্থরাশি দেখিলে বুঝা যায়, ঐতিহাসিকের কত প্ৰবল স্মরণশক্তি থাকা আবশ্যক এবং তঁাহারা কিরূপ সতর্কতায় এই বিস্তৃত ক্ষেত্রে ভ্ৰমণ করিয়াছেন, কিরূপ ধারাবাহিক ভাবে ঘটনাবলী প্ৰকাশ করিয়াছেন। এরূপ শক্তি অল্প লোকের থাকে। কতকাংশে এই গুণ রজনীবাবুতে ছিল। তিনি ইতিহাস লইয়া অধ্যবসায়-সহকারে যেরূপ যত্ন ও পরিশ্রম করিয়া গিয়াছেন, তজন্য তিনি বাঙ্গালীর হৃদয়ে চির-জাগরদ্ধক থাকিবেন । পরিষদের প্রতি তাহার। আন্তরিক যত্ন অনির্বচনীয় । স্থান-সংগ্রহের নিমিত্ত তিনি রুগ্নাবস্থায় পরিষদের জন্য যে ক্লেশ সহিয়া গিয়াছেন, তাহাতে পরিষৎ তাহার নিকট বিশেষরূপে ঋণী। পরিষদের সকল সভ্য কিছু কিছু দিয়া, তাহার স্মৃতিচিহ্ন রক্ষা করা উচিত। অদ্যকার প্রস্তাবিত ছবি, ছাত্ৰবৃত্তি, বা পরিষদের পুস্তকাগারে দান ইত্যাদি নানা উপায়ে তাহা হইতে পারে। কেবল সভায় শোকপ্ৰকাশ করিলে কিছু হইবে না, একটা কিছু করা আবশ্যক। অতঃপর স্বৰ্গীয় রজনী বাবুর জ্যেষ্ঠ রায় উমাকান্ত দাস বাহাদুর উঠিয়া গলদশ্র-লোচনে কাতর-কণ্ঠে বলিলেন, এখান হইতে বাহির হইবার পূর্বে আমার কিছু বক্তব্য আছে। আমার রজনীকাস্তের জন্য আপনারা এতটা করিলেন, তাহাকে আপনারা এতটা আত্মীয় বলিয়া প্ৰকাশ করিলেন, এজন্য আপনাদিগকে ধন্যবাদ। রজনীর শোক সন্তপ্ত পরিবারের পক্ষ হইতে আমি আপনাদিগকে ধন্যবাদ দিতেছি। আমি জানি, আপনারা ধন্যবাদপ্রার্থ নহেন, ধন্যবাদের আশায় এতটা করিতেছেন, তাহা নহে । আমার রজনীকান্তকে আমার