পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (তৃতীয় ভাগ).pdf/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিজয় পণ্ডিতের মহাভারত। 娜 ( ১৩০৩,-২৯শে আষাঢ় পঠিত ) আজ সে পুথি খানি পরিষদের অধিবেশনে উপস্থিত করিতেছি, ইহা এক খানি বাঙ্গালা মহাভারত । বিজয়পণ্ডিত ইহার রচয়িতা ও লেখক বাণেশ্বর দেবশৰ্ম্মি । কাশীদাসের মহাভারতের কথা সকলেই শুনিয়াছেন। বেশী দিনের কথা নয়, বাবু দীনেশ চন্দ্ৰ সেন, পণ্ডিত হরপ্ৰসাদ শাস্ত্রী ও উমেশচন্দ্ৰ বটব্যাল মহাশয়ের আগ্রহে সঞ্জয়, কবীন্দ্ৰপরমেশ্বর, শ্ৰীকর নন্দী, ষষ্ঠীবর, গঙ্গাদাস, রামেশ্বর নন্দী ইত্যাদি। কয়েক জনের মহাভারত। আবিষ্কৃত হইয়াছে। কিন্তু আমাদের আলোচ্য বিজয়-পণ্ডিতের মহাভারত খানি প্ৰাচীন রচনা হইলেও আমাদের নিকট সম্পূর্ণ নূতন । কিছুদিন পূৰ্ব্বে আমাদের মধ্যে অনেকেই বোধ হয়। এই গ্ৰন্থ খানির নামও শুনেন নাই । যখন দেখিতেছি, বাঙ্গালার নানা স্থান হইতে ভাষা মহাভারত বাহির হইতেছে এবং অনেকে আগ্রহের সহিত মাসিক পত্রিকায় সেই সকল মহাভারতের অতি সংক্ষিপ্ত প্ৰসঙ্গ পাঠ করিতেছেন, তখন এ গ্ৰন্থখানির বিষয় জানিতে কাহারও কৌতুহল হইতে পারে, এই ভাবিয়া আজ এই মহাভারত সম্বন্ধে দুই এক কথা বলিতে অগ্রসর হইতেছি। জানিনা, উপস্থিত সুহৃদ বৰ্গ এই ছেড়া জীৰ্ণ শীর্ণ গলিত প্ৰায় পুথি খানির আলোচনায় প্রীতিলাভ করিবেন। কিনা ? পুথিখানি যেরূপে আমার হস্তগত হইয়াছে, তাহাও উল্লেখ না করিয়া থাকিতে পরিলাম না । আজ ছয় বৎসর হইল, পূজার পর, বিশ্বকোষের জন্য প্রাচীন পুথি সংগ্ৰহ করিতে মুর্শিদাবাদ যাত্ৰা করি। প্ৰথমে আজিমগঞ্জে গিয়া আমার এক আত্মীয়ের বাসায় উঠি । এখানে দুই চারি দিন পুথির অনুসন্ধানে ঘুরিয়া ছিলাম। তথাকার ডাকপিয়ন এক দিন এক । মহৎ ব্যক্তির বাটীতে কীটদষ্ট জীর্ণ পুথি নাড়িতে দেখিয়া আমায় বলিয়াছিল, “এ ছোড়া কাগজ লইয়া কি করিবেন ? এরূপ কত ছেড়া কাগজ আমরা ভাগীরথীর জলে ফেলিয়া দিয়াছি। কত পাটা পুড়াইয়া ফেলিয়াছি।” তাহার কথা শুনিয়া আমি বলিলাম, ‘ অতি উত্তম কাৰ্য্য করিয়াছ। এখন বলিতে পাের, এরূপ ছোড়া কাগজ আর তোমার বাড়ীতে আছে কি ?’ সেও হাসিতে হাসিতে উত্তর করিল, “আমি দেখিয়া আসিয়াছি, এখনও বিশ পচিশ খানা পড়িয়া আছে। তবে মেয়ে লোকেরা সে গুলি জলাঞ্জলি করিয়াছে কিনা, বলিতে পারি না ।” তাহার বাটীতে গিয়া পুথি গুলি দেখিবার ইচ্ছা প্ৰকাশ করিয়াছিলাম, কিন্তু ঘটনাক্রমে তথায় যাওয়া ঘাঁটিয়া উঠে নাই। সেই ডাকপিয়নের মুখে নিকটস্থ এক বৈরাগীর বাড়ীতে