পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (ষষ্ঠ ভাগ).pdf/২১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

rr yoov অলঙ্কার-শাস্ত্ৰ । so আরিষ্টেটলের মতে অলঙ্কার-শান্ত্রি অতি প্ৰয়োজনীয় । তিনি বলেন, “অন্যায় ও অসত্য হইতে ন্যায় ও সত্যকে রক্ষা করিতে হইলে অনেক স্থলে অলঙ্কারবিদ্যার প্রয়োজন। সত্য ও ন্যায় অসত্য ও অন্যায় হইতে স্বভাবতঃ বলবত্তর, কিন্তু উপযুক্ত বিচারের অভাবে অনেক সময় সত্য ও ন্যায়কে পরাভূত হইতে হয়। ইহার প্রতীকার হওয়া উচিত। অলঙ্কারবিদ্যার প্রয়োগে ইহার যথেষ্ট প্ৰতীকার হইতে পারে।” আরিষ্টেটল বলেন, “লোককে প্ররোচিত করিবার নিমিত্ত যে সকল উপায় ব্যবহৃত হইতে পারে, সেই সকল উপায়ের উদ্ভাবনী শক্তিই অলঙ্কার । যে উপায় বা তর্ক উদ্ভাবিত হইল উহা স্থায়সঙ্গত কিনা তাহ দেখিও না । উদ্দেশ্য নীতিসঙ্গত কি নীতিবিরুদ্ধ তাহার অনুসন্ধান করিবার প্ৰয়োজন কি ? আলিঙ্কারিক যদি লোককে প্ররোচিত করিবার উপায় নিৰ্দ্ধারণ করিতে পারেন। তাহা হইলেই তাহার কৃতাৰ্থত হইল।” আরিষ্টোটল যুদ্ধ, বাণিজ্য ইত্যাদি বিষয়ক বহুপ্ৰকার অলঙ্কারের উল্লেখ করিয়াছেন। আমরা এ স্থলে ঐ সকল বিষয়ের বর্ণনে প্ৰবৃত্ত না হইয়া তিনি ভাষা সম্বন্ধে যাহা বলিয়াছেন, তাহাই সংক্ষেপে বিবৃত করিতেছি। তঁহার ; মতে মনোরম শব্দের যোজনা এবং যে শব্দ যে অর্থে সচরাচর ব্যবহৃত হইয়া থাকে। সেই শব্দকে সেই অর্থে ব্যবহৃত করাই আলিঙ্কারিকগণের কৰ্ত্তব্য। আলঙ্কারিকগণ যে সকল বাক্য ব্যবহার করিবেন তাহার অর্থ যেন কোন প্রকারেই অস্পষ্ট না হয় । ভাষা অত্যন্ত গ্ৰাম্য অথবা অতিশয় উন্নত হওয়া বিধেয় নহে, উহা সৰ্ব্বথা বিষয়োপযোগী হওয়া উচিত। ঈউরিপিডিস দৈনিক জীবনের ভাষা হইতে শব্দ সংগ্ৰহ করিয়া যে কাব্য রচনা করেন তাহ পাঠ করিয়া সকলেই বিমুগ্ধ হইয়াছিল। আরিষ্টোটল বলেন, গদ্য সাহিত্যকে বিভূষিত ও চিত্তাকর্ষক করিবার র্যাহার অভিলাষ, তিনি যেন সুবিবেচনার সহিত রূপক ব্যবহার করেন । এই রূপক ব্যবহার কিরূপে করিতে হইবে তাহার সম্বন্ধে যথেষ্ট নিয়ম আবিষ্কার করা তত সহজ নহে ; তবে ঐ সম্বন্ধে কতকগুলি উপদেশ ও সঙ্কেত প্ৰদৰ্শন করা যাইতে পারে । তাহার মতে বিশেষণযোজনার তারতম্যের উপরেই রূপকের উৎকর্ষ নির্ভর করে । এখানে বিশেষণ-যোজনা সম্বন্ধে একষ্টি গল্প উল্লিখিত হইতেছে। যেমন এ দেশে ঘোড়-দৌড় হয়, এইরূপ পুৰ্ব্বকালে গ্ৰীসদেশে অশ্বতরীর দৌড় হইত। একদা কোন ব্যক্তি উহাতে জয়লাভ করিয়া মহাকবি, সাইমোনিডিজের নিকট গমন করিয়া বলে “মহাশয়! আপনাকে কিঞ্চিৎ পারিশ্রমিক প্ৰদান করিতেছি, আপনি এই ঘটনা অবলম্বন করিয়া একটি কবিতা রচনা করুন।” সাইমোনিডিজ উহাতে অসম্মতি প্ৰকাশ পূর্বক বলিলেন, “তিনি অৰ্দ্ধগর্দভী সম্বন্ধে কবিতা রচনা করিবার জন্য লেখনীকে নিয়োজিত করিতে পারেন না।” যখন ঐ ব্যক্তি পারিশ্রমিকের মাত্ৰা বৃদ্ধি করিতে চাহিল তখন সাইমোনিডিজ নিম্নলিখিত ভাবে একটি সঙ্গীত আরম্ভ করিলেন ;- হে বায়ুর ন্যায় বেগশালী অশ্ব কন্যাগণ ইত্যাদি। আরিষ্টোটাল রীতিদোষ অধ্যায়ে লিখিয়াছেন-“অহৃদ্যসমাসযুক্ত শব্দ, অপ্রচলিত শব্দ