পাতা:সিমার - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেখতে পদ্মপাতার মতনই বটে । ওটা একজাতের লিলি । পদ্ম পাতা অতখানি প্ৰকাণ্ড হয় না । ওই পাতায় একটি এক বছরের মেয়ে-বাচ্চ বসে থাকতে পারে । ডুববে না।* প্রশ্ন করলাম-মেয়ে-বাচ্চম কেন ? ছেলে হলে কি ডুবে যাবে ? গাইড বলল-অবশ্যই ডুববে । ? ی0R-سی۔ --সেটা বলতে পারব না । কারণ একটা আছে নিশ্চয় । তবে বোধহয়, লিলি মেয়েদের ভালোবাসে । পুরুষদের সহ্য করে না। বলতে-বিলতে গাইড এগিয়ে গেল । গাইডের কথা কেউ-বা বিশ্বাস করছিল, কেউ করছিল না । আমি কী করব ভেবে পাচ্ছিলাম না । আমাদের মনোভাব টের পেয়ে গাইড নদীর ধারে একটি বটগাছের কাছে এনে বলল-দেখুন । গাছ কেমন হিংস্র হয়। কুরি দিয়ে খেজুরটাকে জড়িয়ে কেমন করে মেরে দিয়েছে। দেখি তাই, শূন্য খাঁ খাঁ করছে গাছ। মস্তকহীন নিম্পত্ৰ খেজুর । মরে গেছে। মৃত অবস্থায় বটের নিষ্পেষণে দাঁড়িয়ে কী করছে গাছ ? খেজুরের মাথায় একটা শকুন চুপচাপ বসে ঝিমোচ্ছে। দেখে, ভেতরটা চমকে যায়। শুনতে শুনতে শিরিন দুহাতে মুখ ঢেকে শিউরে একধারা আর্ত-অম্বুটি শব্দ করলেন । সেই শব্দ কান পেতে শুনে মান হাসলেন সাদিক । তারপর বললেন- বিজ্ঞাণীরা একটা যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন । তাতে গাছের হাট-বীট, পালস বীট ধরা পড়ে শুনেছি। শোনা কথা। এক বিজ্ঞানী ওই যন্ত্রে চেয়ে দেখে নাকি গাছের উল্লাস এবং বিষাদ অনুভব করতে পারেন। উনি গাছ ভালোবাসেন বলে গাছও তাঁকে ভালোবাসে । যেখানে তিনি গবেষণা করেন, সেখানে সেই যন্ত্রটা আছে। তার কাঁটা বিজ্ঞানীকে দেখতে পেলে কেঁপে ওঠে আহ্বাদে । সেই বাগানে কাঁচি হাতে মালি ঢুকলেই ঐ কাঁটা নিস্তব্ধ হয়ে যায়। এই ঘটনা স্টাডি করে বিজ্ঞানী বুঝলেন, গাছেরাও খুশি-হওয়া, ভয়-পাওয়া বলে একটা ব্যাপার রয়েছে। অতএব শিরিনকেও সিঁদুরি গাছটাকে খুশি করতে হবে । কথা শুনে শিরিন সাদিকের দিকে চোখ তুলে স্পষ্ট করে তাকালেন। মামাকে আমি আগেই মাসির মনের সব অবস্থা বলে দিয়েছিলাম। মামা বললেন-দেখুন, মেয়েদের শুধু মামাশ্বশুর-ভাগনেবউ (লাজুকীলতা) হয়ে থাকলেই তো চলে না, মেয়েদের

  • বোটানিক্যাল গার্ডেনের গাইডদের মুখে এই ধরনের জ্যান্ত উক্তি ৰান্তবিক প্রচলিত । সেটা কি

শুধুই গল্প ? እoዓ