পাতা:সিমার - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

না । শুকে দেখল । খেল না । উঠোনে পেঁপের ফালি পড়ে রইল । তা নিয়ে বাবা মাসির ওপর অনেক তম্বি করেছিলেন। মারতেও কসুর করেন নি। বাবার বয়েস হয়েছিল। মাসিকে মারার পর ঘেমে নেয়ে উঠলেন । ধুকতে লাগলেন । মাসিকে হাতপাখার ডাঁটি দিয়ে পেটালেন । মাসির গায়ে কালশিটে রক্তাক্ত দাগ হয়েছিল । বাবা মারার পর চেয়ারে বসে। ঘন-ঘন পাখা নেড়ে নিজেকে হাওয়া দিচ্ছিলেন। আর ধোঁকাতে-ধোঁকাতে বলছিলেন-টাকায় ষোলোটা মেয়ে । একটা ফাউ । মনে রেখো । আলাউদ্দিন খিলজির আমলে তিনটি ছাগল বেচে একটা মেয়ে খরিদ করা যেত হাট থেকে । একটা ছাগল তিন টাকা । একটা মেয়ে ন-টাকা । আমি তোমাকে পাঁচ বিঘে জমি দিয়ে কিনেছি। শহরের মাটি দিয়েছি । মোড়েরা সেখানে বাড়ি বানিয়ে ব্যবসা করছে। শুনছি। লস খেয়েছে বলে আড়ত তুলে দিয়ে দেশে চলে যাবে। তখন সেই বাড়ি তোমারই। এত সুখ কে দেয় ? আরবের শেখেরা হলে তোমার মতন কসবিকে এই হাটে কিনে ওই হাটে তালাক দিত । তখন তিন টাকাতেও তোমায় কেউ কিনত না । তা বলে, আমি তোমাকে সাদিকের হাতে ফাউ-তোলা দিতে পারি না । শালা যে লোভে-লোভে আসে, সব মতলব চিনি । তবে কিনা, জালি ছোকরা বলে মাপ পেয়ে যাচ্ছে। ঘরের বউ পরপুরুষের সাথে এত কথা কিসের বলে ? বাবা আড়ালে সাদিককে এই ধাবা বলতেন । সামনে পেলে আরব মুলুকের গল্প করতেন, কাফেরদের কেচ্ছা! শোনাতেন । ইব্রাহিমের পাথর মক্কায় রয়েছে। নাম হাজারে আসুয়াদ । তাতে হাজীরা চুমু দেয় । এতই তার আকর্ষণ, মুখ তুলতে ইচ্ছে হয় না। এতই তার টান । দুই ঠোঁট শক্ত আঠার মতন লেগে যায়। বুঝলে সাদিক, সংসারটাই এইরকম । ছোটাে বউ হল সেই হাজারে আসূয়াদ । টেনে ধরে আছে। ছাড়ে না। ছাড়াতে পারি না। হেঃ হেঃ ! সবই খোদার কুদরত । মেয়েরা হল, তোমাদের ইংরাজি ভাষায়, ম্যাজিক-স্টোন । হাজারে আসুয়াদ । তাই কিনা ? বাবার কথা শুনে সাদিক নিজেকে কাহিল করে হাসতেন । বলতেন-শুনেছি, হাজীরা যখন ঐ পাষাণে পাগলের মতন চুমু খায়, ছাড়তে চায় না, তখন পুলিশ ওদের জোর করে তুলে দেয়। ওঁতোয় । গলায় ধাক্কা দিয়ে তোলে । ভেরি ডিসটারাবিং । -ঠিক বলেছ। সাদিক । মোক্ষম কথা । -আমি তবে সেই পুলিশ । -ठाँ ! क्षाँ शाँ उा । বলেই দুজন চোখাচোখি চোখ মটকে হাসতেন । আমারও মনে হয়, আমাদের সংসারের সাদিকুল সত্যিই ডিসটারবিং এলিমেনট। কিন্তু অপ্রতিরোধ্য। Ve