পাতা:সিমার - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

--ঠাট্টা করেছি । --তুমি আমাকে ঠাট্টা করো ? --ভুল করেছি । -এক বদনা পানি ! এখন বুঝিনি। ঠাট্ট মারানোবা টাইম ? --ডোল করে এনে দিচ্ছি পানি । --না। আনতে হবে না । আমি তুমাকে তালাক দিচ্ছি। তুমি চলা যাও । -6न केि ? ভয়ানক অবাক হয়। মদিনা । হঠাৎ আর স্বামীকে আব চিনতে পাবে না । স্বামীবা কেমন করে তালাক দেয় নানান গল্প শুনেছিল সে ; আজ বুঝতে পাবে, তালাক আসলে পুরুষেব হাদীসী অসুখ । হিস্টিরিয়া । দাঁত-খিচুনি বদ-হাওযার (य } ‘তালাক” বলে ওঠে সুখবাস । সাথে সাথে মদিনা ছুটে গিযে স্বামীর মুখ হাত দিয়ে চেপে ধরতে চেষ্টা করে । সুখবাস ওকে ধাক্কা দিয়ে উঠোনে ছিটকে ফেলে দেয় । তাবপর আরো জোরে ‘তালাক” “তালাক' ক'রে ওঠে । পাশের পড়শীদের গলা তুলে ডাক দেয়-এসো । শোনো । আমি তালাক দিচ্ছি গো । তালাক । তালাক । বায়েন তালাক । মুহুর্তে উঠোন পাড়ার লোকজনে ভর্তি হয়ে যায । তখনো উঠোনে পতিত মদিনা হতবুদ্ধি । বিশ্বাস করতে পারছে না । সুখবাসের বাপ লাঠি হাতে ছুটে এসে সুখবাসকে বেদম মারতে শুরু করে । শালা সিমােবই বটে । শুয়োর কোথাকার । মাথা-গরম, হাট-টেম্পার শালা । বেবুঝ । বদমাস ! শালার বেঁটা শালা, নিমন্দা । দুবলা মেয়েদেব ওপর মদানি করে । আজ উকে আমি মেরেই ফেলাব । বেদম মার খেয়ে সুখবাস উঠোনে শুয়ে পড়ে। কষ ছিড়ে রক্ত পড়ছে। পিঠে লাঠির দাগ বসে গেছে। হতবুদ্ধি মদিনা ছুটে গিয়ে শ্বশুরের লাঠি চেপে ধরে সবেগে । বলে-মারবেন না । ও তো বোঝে না কিছু। ও যে ঠাট্টাও বোঝে না। গো ! বলেই মদিনা দুহাতে মুখ ঢেকে উচ্চকণ্ঠে কেঁদে ওঠে । তার কণ্ঠ আকাশে উঠে খোদার আরশ (সিংহাসন) অবধি ছুটে যায়। S8