পাতা:সিমার - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

उांनांद्म छट्र ! ঈশা ভয় পায় । সংবিত হয় তার । পেছনে সরে এসে ঘামতে থাকে । তারপর চিৎকার করে ওঠে-“না ’ না-মন্দা চাচা । গরিব । খেতে পায় না । জোর নাই ! জানের ভয়ে যে ইসলাম ইসলাম করে, তার ইসলাম কেউ নেয় না । আমি মদিনাকে ছাড়ব না। তালাক দিব না। কিছুতেই না । কিন্তু সে কিছুই বলতে পারে না। মদিনার চােখে চেয়ে নিম্পলক দাঁড়িয়ে থাকে। রাত্রি আরো গভীর হয় । একসময় গিয়াসজী দেখতে পান, মাটির উপর দিয়ে মাটির বুক ষ্টুয়ে একটি হ্যারিকেন এদিকে এগিয়ে আসছে। মাটির এক হাত উচু বুক ষ্টুয়ে চলে আসছে। হ্যারিকেন তা প্ৰথমে বোঝা যায় না । এক ফোঁটা আলো দেখতে পাওয়া যায় । কাছে এলে দেখা যায় একখানা ছইতোলা গরুগাড়ি । সাথে আট-দশ জন লোক ।। সইফুল্লার দল। সইফুল্লা গিয়াসজীর সামনে এগিয়ে এসে বলে-খুব অনাচার করেছেন। এবার চলুন । ঈশার সাথে আমাদের সব কথা হয়ে গিয়েছে। ওবা স্বামী-স্ত্রী যাচ্ছে। আপনিও ওদের সাথে চলে যান । ভোর পাঁচটায় বাস। পাকা রাস্তা আদি তুলে দিয়ে আসবে। দেখতে দেখতে আবার লোকজনে তাবত উঠোন স্রোতের মতন ভরে যায় । সইফুল্লার গলা শুনে দরজা খুলে বাইরে ছিটকে বেরিয়ে আসে ঈশা । গিয়াসজী চমকে ওঠেন । হঠাৎ ঐকটি সঙিন বাঁধে জলের চাপ বেসামাল হয়ে ছোট ছিদ্র দেখা দেয় । সেই ছিদ্রপথে জল পিচকারির মতন ছুটে বার হতে থাকে। ঈশাকে তাঁর সব কথা বলা শেষ হয়নি। তিনি খুশি হয়েছিলেন, মদিনা খুব বুদ্ধিমতি । মা বলতেই সাড়া দিয়েছিল। ভালো করেছে। কিন্তু সেই ডাকও যে নিস্ফল হয়ে यां । লোকের ভিড় আরো বেড়ে যাচ্ছে। দুরের ঝোপটা নড়ে কেঁপে ওঠে । কেউ তা লক্ষ করে না । ঈশা সটান গাড়িতে গিয়ে উঠে পড়ে। মদিনাকে সইফুল্লার লোক জোর করে টেনে হিঁচড়ে আনে । বাইরে এনে ঠেলতে ঠেলতে গাড়ির দিকে নিয়ে যায়। মদিনা তখন আকাশে মুখ তুলে আর্তনাদ ক'রে ওঠে । সুখাবাসের বাড়ির এসবের কোনো প্রতিক্রিয়া হয় না । কেউ বাধা দিতে ছুটে আসে না। কেউ না । দুরের জানালায ফুপু ডেকে ওঠেন প্রবল কাতরতায়-সুখবাস । ঝোপ নড়ে ওঠে । সুখবাস ছুটে আসে না। দূরের ঝোপ থারথার করে কেঁপে ওঠে । সইফুল্লা বলে-যাও । হাঁকিয়ে যাও । তিন ক্রোশ পথ । মাঝরাত এখনো সবখানি গড়ায়নি। কে চালিয়ে যাবি রে ? wo