পাতা:সিমার - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমাকে সত্যি সত্যিই অস্তর থেকে তালাক দিয়েছ ! আমি যে তোমার হই নি, কখনো হব না, কথাটা এত সত্য, জানা ছিল না। আমি হামিদুলের । হামিদুলের কাছেই ফিরে যাব । কিন্তু যদি না ফিরতে চাই, তুমি কি করবে ? বললাম, এখনো একটি তালাক বাকি আছে, সেটা দেব । কথাটা বলতে গিয়ে এমনভাবে কণ্ঠস্বর কেঁপে গেল ! রাবেয়া বল-কাঁটা ফেলে দিয়ে খাটে উঠে এসে আমার মুখের উপর ঝুকে পড়ে হঠাৎ বুকের উপর মাথা রেখে আমার বুকের প্রত্যেকটি স্পন্দন শুনতে লাগল। বাইরে নিমগাছ বাতাসে দুলছিল । তার চিরল ফাঁকে চাঁদের ঝিলিমিলি । আরো রাতে পাশের ঘরে, রাবেয়ার ঘরে, রাবেয়ার আর্তচিৎকার শোনা গেল । ধসমসিয়ে উঠে। ছুটে এলাম । দরজা বন্ধ। খিল তোলা ছিল না। আলো জ্বেলে দিলাম সুইচ অন কবে দিয়ে। রাবেয়া বসে আছে বিছানায় । ফুলে ফুলে কাঁদছে। চোখে আতঙ্ক । --কি হয়েছে রাবেয়া ? --বাইরে কেউ এসেছিল, মামুন । জানলায় টােকা দিচ্ছিল । --কে, এসেছিল ? -জানি না । বুঝলাম, রাবেয়া স্বপ্নে-ভয় পেয়েছে। এক গেলাস জল গড়িয়ে দিলাম। কলসী থেকে । চকচক করে জল খেল । সমস্ত শরীরে যাতনার স্পষ্ট লক্ষণ । কে যেন তার শরীরের উপর অত্যাচার করে গেছে । जांठ পরেব দিন কলেজে এসে মনে হলো, বাড়ি ফিরে যাই । ভাবছি, এমন সময় পিয়নটা এসে খবর দিলে, একজন মহিলা গেটের কাছে দাঁড়িয়ে রয়েছে। আমাকে চায় । প্রফেসর রুম থেকে বেরিয়ে এসে দেখি, রাবেয়া দাঁড়িয়ে । -চলে এসেছি । থাকতে পারলাম না । --বেশ করেছ। চলো। ওহে, দাঁড়াও ; প্রিন্সিপালকে বলে আসি একটু । -ी दलद ? -কী বলব ? বলব, আমার মিসেস এসেছেন । ওঁকে একটু ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে । গেটের বাইরে এসে রিকশা ডেকে দু জনে উঠে বসলাম । রাবেয়া বললে, একলা খুব ভয় করতে লািগল । -স্বাভাবিক । --দিব্যি কেমন চমকে দিয়েছি। ! br8