পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১২
সিরাজদ্দৌল্লা।

মতিঝিলে আর্তনাদ করিতে লাগিলেন। সিরাজদ্দৌলা যে তাহার কত না দুর্গতি করিবেন, তাহা ভাবিয়া আকুল হইয়া উঠিলেন। ইহার অল্পদিন পরেই পূর্ণিয়ার সাইয়েদ আহমদেরও মৃত্যু হইল! তাঁঁহার পুত্র শওকতজঙ্গ পূর্ণিয়া প্রদেশের নবাব হইলেন। শওকত তরুণ যুবক, ঘসেটি বেগম অন্তঃপুরচারিণী দুর্ব্বল রমণী;—সুতরাং সিরাজের কণ্টক দূর হইল বলিয়া আলিবর্দ্দী আশ্বাসলাভ করিতে না করিতেই রাজবল্লভ এক নুতন প্রতিদ্বন্দ্বী উপস্থিত করিলেন।

 নওয়াজেসের কোন সন্তান সন্ততি ছিল না। তিনি সেই জন্য সিরাজদ্দৌলার কনিষ্ঠ সহোদরকে পোষ্যপুত্র গ্রহণ করিয়াছিলেন। সে পোষ্যপুত্র নওয়াজেসের জীবনকালেই পরলোক গমন করে। কিন্তু তাহার একটি অল্পবয়স্ক পুত্রসন্তান বর্তমান ছিল। রাজবল্লভ সেই শিশুসন্তানকে সিংহাসনে বসাইয়া ঘসেটি বেগমের নামে স্বয়ং বাঙ্গালা, বিহার, উড়িষ্যার নবাবী করিবার কল্পনা করিলেন[১]

 আলিবর্দ্দীর জীবনের আশা ফুরাইয়া আসিতেছে, সুনিপুণ রাজবৈদ্যগণ বৃদ্ধ নবাবের দিকে সানয়নে দৃষ্টিপাত করিয়া ভগ্নহৃদয়ে ফিরিয়া আসিতেছেন, সিরাজদ্দৌলা নিশিদিন মাতামহের শয্যাপার্শ্বে কণ্ঠলগ্ন হইয়া বসিয়া রহিয়াছেন;—রাজবল্লভ বুঝিলেন, ইহাই উপযুক্ত সুসময়। তিনি কৃষ্ণবল্লভকে সংবাদ পাঠাইলেন যে, “আর কি দেখিতেছ, ঢাকার ধনসম্পদ ও পরিবার লইয়া নৌকাপথে কলিকাতা অঞ্চলে পলায়ন কর।” কলিকাতায় গিয়া কৃষ্ণবল্লভ যাহাতে ইংরাজের আশ্রয় পান, তাহার জন্য, ওয়াটস সাহেবকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাইলেন। ইংরাজ ইতিহাসলেখক বলেন যে, “ওয়াটস্ সাহেবের বিশেষ .

  1. Sair Mutakherin.