পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/১৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হলওয়েলের দুর্গরক্ষার চেষ্টা।
১৮৩

পলায়ন করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন!” এই কৈফিয়ত কত দূর সত্য তাহা বিচার করা নিষ্প্রয়োজন। যাঁহারা দুর্গমধ্যে অবরুদ্ধ রহিলেন, তাঁহারা হলওয়েল সাহেবকে সেনাপতি নির্ব্বাচন করিয়া সেই “ভিজা বারুদ” লইয়াই কেমন অতুল সাহসে দুই দিন পর্য্যন্ত নবাবসেনার গতিরোধ করিয়া অবশেষে দৈববিড়ম্বনায় কারারুদ্ধ হইয়াছিলেন, সে কথা ইংরাজের ইতিহাসেই প্রকাশিত রহিয়াছে!

 হলওয়েল আর কি করিলেন! বাগবাজারের নিকটে যে একখানি যুদ্ধজাহাজ অপেক্ষা করিতেছিল, সেইখানি নিকটে আনিবার জন্য দুর্গ প্রাচীর হইতে সঙ্কেত করিতে লাগিলেন। নাবিকদিগের অনবধানতায় সে জাহাজ খুলিতে না খুলিতেই চড়ায় আটকাইয়া গেল, নবাবসেনার গুলিবর্ষণে নাবিকগণ ভাগীরথী সন্তরণ করিয়া পলায়ন করিতে লাগিল। তখন অনেকে ভাবিলেন যে, অকস্মাৎ মতিভ্রান্ত হইয়া মহামতি ড্রেক সাহেব সময়ের উত্তেজনায় অগ্রপশ্চাৎ বিচার না করিয়া সর্ব্বাগ্রে পলায়ন করিয়াছেন; কিন্তু তিনি হয়ত নিজেই নিজের মতি ভ্রম বুঝিতে পারিয়া, সহকারিগণের উদ্ধার-কামনায় আবার জাহাজ লইয়া দুর্গদ্বারে উপনীত হইবেন। আশা কুহকিনী! ড্রেক সাহেব নিজে নিজে জাহাজ লইয়া আসিলেন না; দুর্গবাসিদিগের নানারূপ সঙ্কেতপূর্ণ কাতর-নিবেদন অবগত হইয়াও ফিরিয়া চাহিলেন না।[১]

  1. Signal were thrown out from every part of the Fort for the ships to come up again to their stations, in hopes they would have reflected (after the first impulse of their panic was over) how cruel: as well as shameful it was to leave their countrymen to the mercy of a babarous enemy; and for that reason we made no doubt they