পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/২৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুর্দ্দশা।
২৩৯

 চতুর লোকে একবার একটু দাঁড়াইবার স্থান পাইলেই যথেষ্ট হয়। তাহার পর সে আপন কৌশলে সহজেই বসিবার স্থান করিয়া লইতে পারে। ইংরাজদিগেরও তাহাই হইল। যদি সিরাজদ্দৌলা ফলতা পর্য্যন্ত সসৈন্যে শুভাগমন করিতেন, তবে হয়ত সকলেই চোরের মত পলায়ন করিবার পথ পাইতেন না। কিন্তু সিরাজদ্দৌলা ইংরাজ তাড়াইবার জন্য কোনরূপ উদ্যোগ না করিয়া, কেবলমাত্র উদ্ধত-ব্যবহারের শাস্তি দিয়াই নিরস্ত হইলেন। ইহাতেই ইংরাজেরা ফলতায় পলায়ন করিয়া হাঁপ ছাড়িবার অবসর পাইয়াছিলেন। ইংরাজেরা কিন্তু সে কথা স্বীকার করিতে প্রস্তুত নহেন। তাঁহারা বলিতে চাহেন যে, ইংরাজদিগকে নির্ব্বাসিত করাই সিরাজদ্দৌলার অভিপ্রায় ছিল;— কেবল দুর্ব্বলচিত্ত বলিয়াই তিনি ইংরাজদিগের পশ্চাদ্ধাবন করিতে পারেন নাই।[১] এ কথা একেবারে মিথ্যা কথা। সিরাজদ্দৌলার মনে সেরূপ কল্পনা উদিত হইলে ইংরাজ তাড়াইতে মুহূর্ত্তমাত্রও বিলম্ব ঘটিত না, এবং হেষ্টিংস ও ডাক্তার ফোর্থ প্রভৃতি ইংরাজ কুঠিয়ালগণ স্বচ্ছন্দচিত্তে অক্ষতশরীরে কাশিমবাজারে অবস্থান করিবার অবসর পাইতেন না!

  1. Orme vol. II, 79