পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/২৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
উমিচাদের ব্যবহার।
২৩৩

হউক, আর দশ দিন পরেই হউক, ইংরাজেরা আবার এ দেশে বাণিজ্য করিবার জন্য নবাবের সনন্দলাভ করিবেন, সুতরাং দেশের লোকের আনুগত্য দিন দিন ঘনীভূত হইতে লাগিল।

 মেজর সাহেব ফল্‌তায় আসিয়া এই সকল শুভলক্ষণ পর্য্যবেক্ষণ করিলেন। আশা হইল, সাহস হইল,—সময় পাইয়া মাণিকচাঁদকে হস্তগত করিবার আয়োজন হইল; এবং নবাবের শুভদৃষ্টি আকর্ষণ করিবার জন্য বিনীতভাবে আবেদনপত্র লিখিত হইতে লাগিল! রাজা মাণিকচাঁদ ইতিহাসে চতুর-চূড়ামণি বলিয়া সুপরিচিত। নবাব-দরবারের স্রোত কখন্ কোন্ দিকে প্রবাহিত হয়, সে দিকে সর্ব্বদাই তাঁহার তীক্ষ্ণদৃষ্টি দেখিতে পাওয়া যাইত। তিনি যখন বুঝিতে পারিলেন যে, সে স্রোত আবার ধীরে ধীরে ইংরাজদিগের অনুকূল হইয়া প্রবাহিত হইতেছে, তখন তিনিও ইংরাজের সঙ্গে আত্মীয়তা সংস্থাপনের জন্য অসম্মত হইলেন না। ইংরাজেরা নবাবের নিকট আবেদনপত্র পাঠাইবার জন্য প্রস্তুত হইলেন। এই পত্রে অন্ধকূপ হত্যার জন্য কোন প্রকার আর্ত্তনাদ করা হইল না; আবার যাহাতে বাণিজ্যাধিকার প্রাপ্ত হওয়া যায়, তাহার কথাই বিবিধবিধানে বিবৃত হইল। যতদিন সনন্দ না আসিতেছে, ততদিন অন্ততঃ অন্নাভাবে বিড়ম্বনা ভোগ করিতে না হয়, তজ্জন্য বিশেষ ভাবে প্রার্থনা করা হইল। ওলন্দাজদিগের গভর্ণর বিস্‌ডম্‌ সাহেবের যোগে এই আবেদনপত্র নবাবদরবারে প্রেরণ করিবার আয়োজন হইতে লাগিল।

 ভরসা পাইয়া ইংরাজ কুঠিয়ালগণ জাহাজের উপরেই মন্ত্রীসভার বৈঠক বসাইতে আরম্ভ করিলেন। সে বৈঠকে ‘অনরেবল শ্রীল শ্রীযুক্ত