পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/২৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪৪
সিরাজদ্দৌলা।

জঙ্গ পত্রপাঠ লিখিয়া পাঠাইলেন যে,—“আমি বাদশাহী সনন্দ পাইয়া বাঙ্গালা, বিহার, উড়িষ্যার নবাব হইয়াছি। তুমি আমার নিতান্ত পরমাত্মীয়। তোমার প্রাণবধ করিতে ইচ্ছা নাই। যদি প্রাণ লইয়া পূর্ব্ববঙ্গের কোন নির্জ্জন পল্লীতে পলায়ন করিতে চাও, আমি তাহাতে বাধা দিতে চাহি না। বরং তুমি অন্নবস্ত্রে কষ্ট না পাও, তাহারও ব্যবস্থা করিতে সম্মত আছি। আর বিলম্ব করিও না;—পত্রপাঠ রাজধানী ছাড়িয়া পলায়ন কর। কিন্তু সাবধান! রাজকোষের কপর্দ্দকেও হস্তক্ষেপ করিও না। যত শীঘ্র পার প্রত্যুত্তর পাঠাইও। সময় নাই। অশ্ব সুসজ্জিত। আমিও রেকাবদলে পা তুলিয়া দিয়াছি। কেবল তোমার প্রত্যুত্তর পাইতে যাহা কিছু বিলম্ব।”[১]

 সিরাজদ্দৌলা যথাকালে এই উদ্ধতলিপি নবাব-দরবারের পাত্রমিত্রদিগের কর্ণগোচর করিলেন। তাঁহার আশা ছিল যে, অতঃপর কেহ আর যুদ্ধযাত্রাকালে বাধা প্রদান করিবে না, এবং রাজবিদ্রোহী শওকতজঙ্গের পক্ষ সমর্থনার্থ বাদানুবাদ করিতে সাহস পাইবে না। কিন্তু কথা উঠিতে না উঠিতেই প্রতিবাদ আরম্ভ হইল। মন্ত্রিদল বুঝিলেন যে, শাহজাদা শুভাগমন করিতে এখনও অনেক বিলম্ব; তিনি সশরীরে শুভাগমন না করিলে প্রকাশ্যে শওকতজঙ্গের পক্ষাবলম্বন করা বিড়ম্বনামাত্র;—ইহার মধ্যেই যদি সিরাজদ্দৌলা যুদ্ধযাত্রা করেন, তবে শওকতজঙ্গের সকল চক্রান্তই চুর্ণ হইয়া যাইবে। সুতরাং তাঁহারা সকলেই প্রতিবাদের প্রতিধ্বনিতে সিরাজদ্দৌলাকে

  1. Stewart's History of Bengal.