পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/৩৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৩৬
সিরাজদ্দৌলা

সেনা বসিয়া রহিয়াছে। তাহারা বীরোচিত কর্ত্তব্য সম্পাদন করিলে, হয়ত হুগলীর নিকটেই ইংরাজেরা সসৈন্যেই পঞ্চত্ব প্রাপ্ত হইতেন। কিন্তু কেহই ইংরাজের গতিরোধ করা দূরে থাকুক, একবার বীরের ন্যায় সম্মুখসমরে অগ্রসর হইবারও আয়োজন করিল না। ইতিহাসে কেবল এই পর্য্যন্তই দেখিতে পাওয়া যায় যে, হুগলীর ফৌজদার ইংরাজের যুদ্ধজাহাজ দেখিয়া এবং ক্লাইবের তর্জ্জন গর্জ্জন শুনিয়া নিতান্ত ভীত হইয়া পথ ছাড়িয়া দিয়াছিলেন।

 ইংরাজেরা যখন চন্দননগর আক্রমণ করেন, মহারাজ নন্দকুমার তখন হুগলীর ফৌজদার! তিনি সে যাত্রা কি জন্য ইংরাজের পথ ছাড়িয়া দেন, সে কথা নবাবের কর্ণগোচর হইয়াছিল। এবার সেইজন্য তিনি হুগলীতে আর একজন নূতন ফৌজদার পাঠাইয়াছিলেন।[১] এই সকল বাঙ্গালী ফৌজদার বা তাহাদের কালা সিপাহীরা যে কিরূপ বীরবিক্রমে অস্ত্রচালনা করিত, তাহা ইংরাজের অজ্ঞাত ছিল না। তথাপি তাহারা কোন্ সাহসে দেড়শত মাত্র জাহাজী-গোরা পশ্চাতে রাখিয়া সসৈন্যে সম্মুখে অগ্রসর হইয়াছিলেন? তাঁহারা কি জানিতেন না যে হুগলীর ফৌজদার পৃষ্ঠদেশ আক্রমণ করিলে ইংরাজের কিরূপ সর্ব্বনাশ হইতে পারিত? ইংরাজদিগের নিশ্চিন্ত

  1. The Nawab entertaining supicions of Nun Coomar, had lately sent a new Governor to Hoogly, who threatened to oppose the passage of the boats, but the twenty gunship coming up and anchoring before his fort, and a menacing letter from Colonel Clive, deterred him from that resolution.—Orme, vol, ii. 164. এই ভয়প্রদর্শনপূর্ণ পত্রখানি বর্ত্তমান নাই। সেই ক্লাইব, সেই উমাচরণ এবং সেই পত্র;—পূর্ব্বের ন্যায় এবারও যে সহজে কার্য্যোদ্ধার হয় নাই, তাহা কে বলিবে।