পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/৩৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ইরিচ খাঁ।
৩৭৩

ব্যাকুল হইয়া উঠিল; কেহ কেহ ইংরাজের নিকট আত্মসমর্পণ করিবার জন্য সিরাজদ্দৌলাকে উত্তেজনা করিতেও ত্রুটি করিল না।[১] চারিদিকে আকুল আর্ত্তনাদের সূত্রপাত হইল।

 এই সকল কাপুরুষোচিত প্রস্তাবে কর্ণপাত না করিয়া, সিরাজদ্দৌলা সেনাসংগ্রহের জন্য ইরিচ খাঁকে পুনরায় উত্তেজনা করিতে লাগিলেন। ইরিচ খাঁ কিছুতেই সম্মত হইলেন না; তখন অনন্যোপায় হইয়া সিরাজদ্দৌলা বিহার-যাত্রার উপযোগী সেনা সংগ্রহের প্রস্তাব করিতে লাগিলেন। ইরিচ খাঁ তাহাতেও অসম্মত হইয়া ধনরত্ন লইয়া পলায়ন করিলেন!

 সিরাজদ্দৌলা ইহাতেও ভগ্নমনোরথ না হইয়া স্বয়ং সেনাসংগ্রহের জন্য চেষ্টা করিতে লাগিলেন। গুপ্ত ধনাগার উন্মুক্ত হইল;—প্রভাত হইতে সায়াহ্ন এবং সায়াহ্ন হইতে প্রথম রাত্রি, সেনাদলকে উত্তেজিত করিবার জন্য মুক্তহস্তে অর্থদান চলিতে লাগিল।[২] রাজকোষ উন্মুক্ত পাইয়া, শরীররক্ষক সেনাদল যথেষ্ট অর্থশোষণ করিল, এবং প্রাণপণে সিংহাসন রক্ষা করিবে বলিয়া ধর্ম্ম প্রতিজ্ঞা করিয়া একে একে পলায়ন করিতে আরম্ভ করিল।[৩] সিরাজের সকল চেষ্টা বিফল হইল!

  1. Some advised him to deliver himself up to the English, which he imputed to treachery.-Orme ii. 179.
  2. When Shirajadaula arrived at the city, his palace was full of treasure; but with all that treasure, he could not purchase the confidence of his army; he was employed in lavishing considerable sums among his troops to engage them to another battle.-First Report, 1772.
  3. As a last resource, the Nabab opened the doors of his treasury, and distributed large sums to the soldiers; who received his