পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
88
সিরাজদ্দৌলা।

সিরাজের পিতা জয়েনউদ্দীনের মৃত্যুর পর, ঐ পদে সিরাজকে নাম মাত্র নিযুক্ত করিয়া, প্রকৃত প্রস্তাবে রাজা জানকীরামকেই প্রতিনিধি শাসনকর্ত্তা করিয়া রাখা হয়।”[১]

 লুণ্ঠনপরায়ণ মহারাষ্ট্রদলকে হাতের কাছে পাইয়াও আক্রমণ করা হইল না, আতাউল্লার বিশ্বাসঘাতকতার পরিচয় পাইয়াও তাঁহাকে সসৈন্যে ধনসম্পদ লইয়া স্থানান্তরে চলিয়া যাইবার অনুমতি দেওয়া হইল, মীরজাফরের ন্যায় বিশ্বাসী কুটুম্বকে সমুচিত শিক্ষা না দিয়া তাঁহাকে সেনাপতিপদে বাহাল রাখা হইল, এতকষ্টে বিহার প্রদেশে শান্তি সংস্থাপন করিয়া রাজা জানকীরামকে তাহার ফলভোগ করিতে দিয়া সিরাজদ্দৌলাকে কে নামসর্ব্বস্ব পাটনার নবাব বলিয়া ঘোষণা করা হইল,—ইহার কোন ব্যবস্থাই সিরাজদ্দৌলার মনঃপূত হইল না। তিনি প্রতিবাদ করিয়াও যখন আলিবর্দ্দির মত পরিবর্ত্তন করিতে পারিলেন না, তখন মাতামহের উপর নিতান্ত অসন্তুষ্ট হইয়া ক্ষুণ্নমনেই রাজধানীতে প্রত্যাগমন করিলেন।

 ইহার পর একবৎসর একরূপ নিরাপদে কাটিতে না কাটিতেই আবার উড়িষ্যাপ্রদেশে মহারাষ্ট্রসেনার সমর-কোলাহল উপস্থিত হইল! সংবাদ পাইবামাত্র মুর্শিদাবাদ হইতে ছুটিয়া যাওয়া সহজ নহে, সুতরাং আলিবর্দ্দী এইবার হইতে মেদিনীপুরে বাসস্থান নির্ম্মাণ করিরার আয়োজন করিলেন। মহারাষ্ট্রীয়দিগকে পরাজয় করিয়া আসিয়া, এবার কিছু দিন মেদিনীপুরেই অবস্থান করিতে আরম্ভ করিলে সিরাজ মাতামহের অনুমতি লইয়া মুর্শিদাবাদে প্রত্যাগমন করিলেন।[২]

  1. সাহিত্য, ৬ষ্ঠ বর্ষ ৬৯৫-৯৬ পৃঃ। শ্রীযুক্ত কালীপ্রসন্ন বন্দ্যোপাধ্যায়।
  2. সিরাজদ্দৌলা আপ্‌নে হসুল দাবীকো রওয়ানা হুয়া আওর মহবৎজং