পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সিরাজের পত্র।
৪৭

 আলিবর্দ্দী যদি সংবাদ পাইবামাত্র দুর্গদ্বার উন্মোচন করিবার জন্য জানকীরামকে আদেশ করিয়া পাঠাইতেন, হয়ত সহজেই সকল গোল- যোগ মিটিয়া যাইত। তিনি তাহা না করিয়া সিরাজদ্দৌলাকে স্নেহের উপদেশসূচক এক দীর্ঘ পত্র লিখিয়া পাঠাইলেন এবং রাজধানীতে প্রত্যাগমন করিবার জন্য বারংবার অনুরোধ জানাইতে লাগিলেন। সিরাজের ক্রোধাগ্নি আরও দ্বিগুণবেগে জ্বলিয়া উঠিল!

 সিরাজদ্দৌলা আর স্বার্থ নষ্ট করিয়া নবাবের হাতের ক্রীড়া- পুত্তল হইয়া বসিয়া থাকিতে সম্মত নহেন। কবে নবাবের পক্ককেশ চিরবিশ্রাম লাভ করিবে, আর কবে বা তিনি নবীন মস্তকে রাজ- মুকুট পরিয়া বাঙ্গালা, বিহার, উড়িষ্যার মস্‌নদে উপবেশন করিবেন,— সেই অনিশ্চিত শুভদিনের প্রতীক্ষায় সুনিশ্চিত পৈতৃক-সিংহাসন পরিত্যাগ করিতে পারেন না! আলিবর্দ্দী সকলকেই যথাযোগ্য রাজ- পদ দিয়াছেন, কেবল শূন্যগর্ভ স্তোকবাক্যে সিরাজদ্দৌলাকেই পিতৃ- রাজ্য হইতে বঞ্চিত রাখিবেন কেন? তিনি যখন বিহারের নবাব, তখন যেরূপে হউক আত্মরাজ্য অধিকার করিবেন; তাহাতে যেন বৃদ্ধ নবাব বাধা প্রদান করিবার চেষ্টা না করেন। রাজ্য বহুবিস্তৃত; বাহুতে বহু বল; সুতরাং আবশ্যক হইলে মাতামহের সঙ্গে শক্তি পরীক্ষা করিতেও দৌহিত্র কাতর হইবেন না; হয় উভয়েই অসি- হস্তে জীবন বিসর্জ্জন করিবেন, না হয় যাঁহার জয় হইবে, তিনি নিরুদ্বেগে রাজ্যভোগ করিবেন। এইরূপ সংকল্প করিয়া সিরাজদ্দৌলা লিখিলেন;—

 “জোনাব আলি! বা ওজুদ্ এজ্‌হার ইস্ কাদার মেহের্ ও সাফ্‌কাৎকে মেরে দুষমানোকে দার্‌পার্ পার্‌ওয়ারাস হেঁয়। আজা জুম্‌লা হোসেন কুলিখাঁ কো